Advertisement
E-Paper

পাহাড়ের ধসে মৃতদের পরিচয় জানা গেল! রইল সম্পূর্ণ তালিকা, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি মিরিকে

শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন নেপালের নাগরিক। দুর্যোগ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। উদ্ধারকাজ চলছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:১৯
ধসে বিধ্বস্ত দার্জিলিং।

ধসে বিধ্বস্ত দার্জিলিং। —নিজস্ব চিত্র।

রাতভর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকা। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকালের মধ্যে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন নেপালের নাগরিক। দুর্যোগ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

এক রাতের বৃষ্টিতে শুধুমাত্র মিরিকেই ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। এ ছাড়া দার্জিলিঙের সিংমারিতে এবং কার্শিয়াঙের সোনাদায় এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মিরিক মহকুমা এলাকায় মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ঊষা রাই (৭২), বিজেন্দ্র রাই (৭০), সাধনা তামাং (৩৫), আহান ছেত্রী (৯), রুহি তামাং (১১), স্নেহা প্রধান (১৯), অনুজ প্রধান (৪২), আরুষি ছেত্রী (১২), অনিতা প্রধান (৪১), ফুচুং ডুকপা (৫০) এবং সুমিত লেপচা (৪৬)। এ ছাড়াও ধসে প্রাণ হারিয়েছেন মিনা সেওয়া (৬২), জ্ঞানচুক তামাং (২০), বাবুলাল রাই (৪২) এবং সাধনা তামাং (৩৫)।

দার্জিলিঙের সিঙ্গলীলা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া মানেভঞ্জনে ধসে মৃত্যু হয়েছে নেপালের পাঁচ নাগরিকের। পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সান্দাকফু যাওয়ার সবচেয়ে প্রচলিত পথটি মানেভঞ্জন হয়েই যায়। মানেভঞ্জন লাগোয়াই রয়েছে নেপাল সীমান্ত। শনিবার রাতভর বৃষ্টিতে মানেভঞ্জনে ধস নেমে মৃত্যু হয় নেপালের ডোলখা জেলার ময়নাপোখরির বাসিন্দা দীপ বাসনেট (৪৬), ভবানী বাসনেট (৪৪) এবং দীপিকা বাসনেট (১২)-এর। এ ছাড়া নেপালের ইলামের বাসিন্দা মনমায়া ছেত্রী (৬৭) এবং রশ্মিকা ছেত্রী (১০)-রও মৃত্যু হয়েছে মানেভঞ্জনের ধসে।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সরকারি হিসাবে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। রবিবার বিকেলে ‘গোর্খা টেরিটরিয়াল অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর মুখপাত্র এসপি শর্মার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২০। উদ্ধারকাজ চলছে। মিরিক ও সুখিয়াপোখড়ি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’

নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে শনিবার রাতে বালাসন নদীর উপর দুধিয়ার লোহার সেতুর একাংশ বৃষ্টিতে ভেঙে যায়। এর ফলে শিলিগুড়ি এবং মিরিকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সৌরেনির কাছে দারাগাঁওয়ে গভীর রাতে ধস নামে। একটি বাড়ি ধসে যায়। আপার দুধিয়া বা ডাম্ফেডার এলাকায় চার থেকে পাঁচটি বাড়ি ধসে গিয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। বেশ কিছু হোমস্টে ছিল দার্জিলিঙের ওই অংশে। সেগুলোও ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুধিয়া নদীর একপাশে রয়েছে বিএসএফের ক্যাম্প। সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা জানান, দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় ভারী বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি থেকে সম্পত্তির ক্ষতি, সরকারি পরিকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা আমাদের বিজেপি কর্মীদের মানুষকে সাহায্য ও সহায়তার জন্য একত্রিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’’ পাহাড়ে ধস পরিস্থিতিকে রাজ্য বিপর্যয় ঘোষণা করার দাবি তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দিয়েছেন রাজু। উত্তরবঙ্গের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে রবিবার সকাল থেকেই নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরের জেলাগুলির সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকও সেরেছেন তিনি। সোমবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নিয়ে তিনি পৌঁছে যাবেন উত্তরবঙ্গে। শিলিগুড়ি থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন তিনি।

Darjeeling landslide Disaster Heavy Rain North Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy