বেলদা কলেজে গেরুয়া পতাকা হাতে এবিভিপি কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
কারও হাতে ধরা গেরুয়া পতাকা। কেউবা পতাকা গুটিয়ে তাকে লাঠি করে নিয়েছেন। আর সে লাঠি মাথার উপরে তুলে গদার মতো ঘোরাচ্ছেন।
সোমবার বেলদা কলেজে এবিভিপি সমর্থকেরা যখন আগ্রাসী মেজাজে স্লোগান দিয়ে কলেজে মিছিল করছেন, তখন টিএমসিপি সমর্থকেরা অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বসে। সেখানেও উঠছে স্লোগান।
ইউনিয়ন অফিসের দখলদারি ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ। প্রথমে কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি। পরে শক্তি প্রদর্শন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকলেন। দু’পক্ষের দাপাদাপিতে বেশ কিছুক্ষণের জন্য ব্যাহত হয় পড়াশোনা।
মাসখানেক আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ড লাগিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন কোনও রাজনৈতিক কার্যকলাপ করা যাবে না। এবিভিপির অভিযোগ, এ দিন সকালে কলেজ খোলার পর দেখা যায় ইউনিয়ন রুম-সহ কলেজের একাধিক জায়গায় পোস্টার লাগানো রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সেই পোস্টারে টিএমসিপির সদস্য হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয় এবিভিপি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টিএমসিপি তাদের পতাকা খুলে নিলেও অভিযোগ, পোস্টার ফেস্টুন, ব্যানার খোলেনি। এরপরই টিএমসিপির লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে দেয় এবিভিপি। ইউনিয়ন রুম থেকে খুলে দেয় পোস্টার, ব্যানার। সরিয়ে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারীর কাটআউট।
এখানেই শেষ নয়। এরপরই শুরু হয় স্লোগান আর ঝান্ডা উঁচিয়ে মিছিল। টিএমসিপি তখন অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয়। এবিভিপির বেলদা কলেজ ইউনিটের সহ সভাপতি তমালজ্যোতি জানা বলেন, ‘‘নির্বাচন হয়নি। তবুও টিএমসিপি ইউনিয়ন অফিস দখল করে বসে আছে। সংগঠনের পতাকা, পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার লাগানো আছে। কেন থাকবে ? ওদের থাকলে আমাদেরও থাকবে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘ইউনিয়ন অফিস বর্তমানে ছেলেদের কমন রুম করা হোক।’’ কলেজের টিএমসিপির নেতা পীযূষ দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হল। লাঠি নিয়ে কলেজ অভ্যন্তরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবিভিপি। কলেজের শান্তি বিঘ্নিত করছে। এ আমরা মেনে নেব না।’’
উত্তেজনা থামাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে তারা। ইউনিয়ন অফিসকে নিয়ে গন্ডগোলের জেরে শেষ পর্যন্ত ছাত্র সংসদ অফিসে তালা ঝোলাতে বাধ্য হন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কলেজে এবিভিপির ইউনিট ছিল। তবে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের পর তাদের সক্রিয়তা বেড়েছে।
এ দিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সহ সভাপতি মনোজ দেব বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত ঘটনা। ইউনিয়নে বসে ছাত্ররা কাজ করছিল এবিভিপি সদস্যরা এসে তাণ্ডব চালায়। ছেঁড়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। সবটাই কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যেই ঘটেছে।’’ এবিভিপির জেলা প্রমুখ স্বরূপকুমার মাইতি বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজ আমাদের সংস্কৃতি নয়। তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দ্বারা ইউনিয়ন অফিস দখল করে বসে থাকা অনৈতিক।’’ চেষ্টা করেও অধ্যক্ষ মানবেন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy