অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে বেআইনি ভাবে টাকা আদায় করছে পুলিশ— এ কথা জানিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। সূত্রের দাবি, ওই টাকার ভাগ ‘কাঁথিতে’ পৌঁছচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। প্রসঙ্গত, কাঁথিতেই অধিকারী বাড়ি। আর এতেই শোরগোল পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশে।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘এমন কিছু জানা নেই।’’
জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, গত কয়েক মাসে জেলায় বাড়তি পণ্য বোঝাই গাড়ি চলাচল অনেকটাই কমেছে। তা ছাড়া, কোনও গাড়ি ‘ওভারলোডেড’ কি না, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় পরিবহণ দফতর। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ কোনও গাড়ি ধরলে তার ওজন পরিমাপ করে জরিমানার অঙ্ক নির্ধারণ থেকে টাকা আদায়, সবটাই করেন পরিবহণ আধিকারিকেরা। এ ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও ভূমিকা থাকে না বলে দাবি করা হচ্ছে পুলিশ সূত্রে।
ঘটনায় রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যখন এমন বলেছেন, তখন নিশ্চিত তাঁর হাতে তথ্য রয়েছে।’’ গেরুয়া শিবির অবশ্য এতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখছে। তাদের মতে, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে গোটা রাজ্যের তুলনায় শুভেন্দুর জেলায় বিজেপির ফল ভাল। জেলার দু’টি লোকসভাতেই পদ্ম ফুটেছে। আর নন্দীগ্রামের এই জেলায় ১৬টি বিধানসভার মধ্যে ১৫টিতেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সেই হার মানতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে ঘুরিয়ে অধিকারীদের নিশানা করছেন। সদ্য জয়ী কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘উনি পাগলের প্রলাপ বকছেন।’’
বামেদের আবার মত, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সত্যি হলে আদতে তাঁর নিজের সরকারের অপদার্থতাই প্রকাশ পায়। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির কথায়, ‘‘উনি কাঁথি আর পূর্ব মেদিনীপুরের ফোবিয়ায় ভুগছেন। ওঁর কথা সত্যি হলে বলব, মুখ্যমন্ত্রীর স্বরাষ্ট্র দফতর সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)