Advertisement
E-Paper

‘বহিষ্কৃত’ নেতার গাড়ির নীচে বোমা 

বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শেখ শাহবুদ্দিনের গ্যারাজে গাড়ির পিছনের চাকার পাশে দুটি তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০০:২৯
গাড়ির নীচে পড়ে রয়েছে বোমা। নিজস্ব চিত্র

গাড়ির নীচে পড়ে রয়েছে বোমা। নিজস্ব চিত্র

প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা বর্তমান প্রধানের স্বামীর গাড়ির তলা থেকে উদ্ধার হল তাজা বোমা। ঘটনায় ফের উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম।

বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শেখ শাহবুদ্দিনের গ্যারাজে গাড়ির পিছনের চাকার পাশে দুটি তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বোমা দুটি উদ্ধার করে। শাহবুদ্দিন বলেন, ‘‘বোমা দুটি পড়ে থাকতে দেখে আমার লোকজন আমাকে খবর দেয়। আমি পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে বোমা উদ্ধার করেছে।’’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বহিরাগতদের এনে ফের অশান্তি বাধানোর চেষ্টা চলছে নন্দীগ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা গিয়েছে, সাদা বাইকে করে শেখ আমারুল ও শেখ মাসুদ এসে বোমা রেখে পালিয়ে যায়। এরা দুজনেই আবু তাহেরের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত। দু’জনের নামেই নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আবু তাহের রাজনৈতিকভাবে আমার সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরেই এ সব করছে। আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে প্রচার করছে। আবু তাহেরের ক্ষমতা থাকলে বহিষ্কারের চিঠি আমাকে দিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’’

আবু তাহের বলেন, ‘‘যারা অভিযোগ করছে তারা বর্তমানে তৃণমূলের কেউ নয়। তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বোমাবাজির নাটক করে তারা প্রচারের আলোয় থাকতে চাইছে।’’

উল্লেখ্য বেশ কয়েকদিন ধরেই লাগাতার বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে নন্দীগ্রামে। যা নিয়ে কিছুদিন আগেই রাজারামচকে পথ অবরোধও হয়। বুধবার রাতেও মাদ্রাসা স্কুল মাঠে বোমার শব্দ শোনা যায়। যদিও পুলিশ-প্রশাসন বোমাবাজির কথা মানতে চায়নি। এ দিন শাহবুদ্দিনের গাড়ির নীচে বোমা পাওয়া যাওয়ার ঘটনা বোমাবাজির অভিযোগকে মান্যতা দিল বাসিন্দাদের দাবি। এ দিনও তৃণমূলের পতাকা নিয়ে পুইখাটা পুলে পথ অবরোধ করা হয়।

প্রসঙ্গত, আমপানে দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে কেন্দেমারি পঞ্চায়েতের প্রধান মনসুরা বিবিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচনে কেউ না দাঁড়ানোয় ফের মনসুরাই প্রধান হন। কিন্তু জেলা নেতৃত্ব তাঁকে পদত্যাগ করতে বলে। কিন্ত সেই নির্দেশ না মানায় মনসুরা ও তাঁর স্বামী শাহবুদ্দিনকে বহিষ্কার করা হয়। জেলা তৃণমূল সভাপতিও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি জানান। যদিও শাহবুদ্দিনের দাবি, এই ধরনের কোনও লিখিত নির্দেশ তিনি পাননি। তা ছাড়া রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। ক্রমশ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাত বাড়ে শাহবুদ্দিনের। এ দিন তাঁর গাড়ির নীচে বোমা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের পতাকা হাতে বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, বহিষ্কৃত একজন নেতার পক্ষে দলের পতাকা নিয়ে কী ভাবে বিক্ষোভ হল? যা নিয়ে স্পষ্টতই অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূলের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। আমরা দলের পক্ষ থেকে দাবি করেছি, যে বা যারা এই ঘটনাট জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘আজ বোমা পাওয়া যাচ্ছে। কাল লাশ পাওয়া যাবে। কাটমানিতে টান পড়লে তৃণমূল যে সব কিছুই করতে পারে এই ঘটনাই তার প্রমাণ দিচ্ছে।’’ হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ সব দিকে নজর রাখছে। তদন্ত করা হচ্ছে।’’

Nandigram Panchayat Explosives
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy