Advertisement
E-Paper

বড় পর্দায় শাহি সভা, ভোগাল ইন্টারনেট

সামাজিক দূরত্বের করোনা বিধি মেনে বিজেপি কার্যালয়গুলিতে বড় পর্দায় সভা দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৬:১৪
মেদিনীপুর শহরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে লাগানো হয়েছিল টিভি। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর শহরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে লাগানো হয়েছিল টিভি। নিজস্ব চিত্র

ভিড় নেই। তবে ঘাটতি নেই উৎসাহেও।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ভার্চুয়াল সভা ঘিরে মঙ্গলবার চনমনে ছিল গেরুয়া শিবির। সামাজিক দূরত্বের করোনা বিধি মেনে বিজেপি কার্যালয়গুলিতে বড় পর্দায় সভা দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। কর্মী-সমর্থকেরা যাতে মোবাইলে শাহি সভায় চোখ রাখতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেও সচেষ্ট ছিলেন নেতৃত্ব। তবে কোথাও ইন্টারনেট ভুগিয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগও উঠেছে।

গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলের যে দুই জেলায় পদ্ম ফুটেছিল, সেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে ‘জনসংবাদ র্যালি’ নামে শাহের ভার্চুয়াল সভা ঘিরে বিজেপির অন্দরে তুমুল উৎসাহ ছিল। কয়েক দিন ধরে প্রচারও চলেছিল পুরোদমে। লকডাউনে পথসভা সম্ভব নয়। তাই দেওয়াল লিখে, হাতে লেখা পোস্টার সাঁটিয়ে জানানো হয়েছিল— ‘বিশাল জনসভা। প্রধান বক্তা: অমিত শাহ। ৯ জুন, ২০২০। সময় সকাল ১১টা’। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশ জানিয়েছেন, ২,১৫০টিরও বেশি বুথে সভা দেখানোর ব্যবস্থা ছিল। জেলা জুড়ে ৩৮টি স্ক্রিন লাগানো হয়। ঘাটাল মহকুমার ১৪টি মণ্ডল কমিটির অফিসে সভা দেখানো হয়। সকাল থেকেই ঘাটাল, দাসপুর, সোনাখালি, চন্দ্রকোনা, রামজীবনপুরে পার্টি অফিসে জড়ো হন কর্মী-সমর্থকেরা ।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এখন মেদিনীপুরের সাংসদ। তাঁর ‘খাসতালুক’ খড়্গপুর শহরে অবশ্য ২, ২৪, ২৯, ২৬-সহ হাতে গোনা কয়েকটি ওয়ার্ডে চাঁদোয়া টাঙিয়ে ভার্চুয়াল জনসভা দেখার ব্যবস্থা হয়েছিল। ডেভেলপমেন্ট এলাকায় রেল বাংলোয় দিলীপের সাংসদ কার্যালয়ে ছোট এলইডি স্ক্রিনে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়-সহ জন দশেক নেতা-কর্মী শাহের বক্তব্য শুনেছেন। অন্য মণ্ডলগুলিতে বড় পর্দা তেমন ছিল না। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা নেতা বাবলু বরমের বাড়িতে চাঁদোয়া টাঙিয়ে কয়েকজন ল্যাপটপে সভা শুনেছেন। ভুগিয়েছে ইন্টারনেটও। শহরের ওল্ড সেটেলমেন্টে মধ্য মণ্ডলের কার্যালয়ে নেট-সমস্যা বাধা হয়েছে। মধ্য মণ্ডলের সভাপতি শ্রী রাও বলেন, “ইন্টারনেটের সমস্যায় ভার্চুয়াল জনসভা এলইডিতে দেখানোর ব্যবস্থা করতে পারিনি। বুথের কর্মীরা মোবাইলেই সভা শুনেছেন।’’

ডেবরায় বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা কার্যালয় ও বালিচক কার্যালয়ে জনা কয়েক নেতা-কর্মী এলইডিতে সভা শোনেন। তবে সবং, পিংলার মতো এলাকায় তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি কাশীনাথ বসু বলেন, “ডেবরায় আয়োজন ছিল। তবে করোনার ভয়ে ভিড় হয়নি। মোবাইলেই বহু মানুষ যুক্ত হয়েছিলেন। আর সবং, পিংলায় তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে এই কর্মসূচি কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘বিজেপির ভার্চুয়াল সভা সুপার ফ্লপ হয়েছে।’’ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বজায়ে সর্বত্র ভিড় হতে দিইনি আমরা। অধিকাংশ মানুষ মোবাইলে দেখেছেন। যাঁরা পারেননি, বুথের কর্মীরা পরে ইউটিউবে তাঁদের সভা দেখার ব্যবস্থা করবেন।”

ঝাড়গ্রাম শহরে বিজেপি-র জেলা কার্যালয়ের সভাঘরে বড় পর্দায় শাহের সভা সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ছিলেন জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী, সাংসদ কুনার হেমব্রম, জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাতোরা। দু’শো আসনের হলঘরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনা তিরিশেক নেতা-কর্মী হাজির ছিলেন। সুখময় জানান, জেলার ১৮টি মণ্ডলে কোথাও মোবাইলে, কোথাও টিভিতে, কোথাও জায়ান্ট স্ক্রিনে সভা দেখানো হয়। তাঁর দাবি, ‘‘দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ অমিতজির সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছেন।’’

সুখময়ের অভিযোগ, জেলার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ ও কেবল্ টিভি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনারের কথায়, ‘‘প্রতিটি বুথে কর্মসূচি হয়েছে। বাড়ি থেকেও সমাজ মাধ্যমে বহু মানুষ কর্মসূচিতে যোগ দেন।’’তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভানেত্রী বিরবাহা সরেনের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-র সবই মিথ্যাচার আর ভুলে ভরা। ভার্চুয়ালি লোকজনের যোগ দেওয়ার দাবিও ভিত্তিহীন।’’

Amit Shah Virtual Meeting BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy