মঞ্চে: গঙ্গারামপুর থানা এলাকায় বিপ্লব। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
মাত্র ৯ মাসেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে তৃণমূলের ঘর ভেঙে প্রায় এখন দু’টুকরো। দল বদল করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মোট ১০ জন সদস্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেও বৃহস্পতিবার সভাধিপতির নেতৃত্বে ৫ জনকে জেলাপরিষদে দেখা গিয়েছে। সহকারী সভাধিপতি সমেত তৃণমূল শিবিরে ৮ জন রয়েছেন। তবে আরও চার জন বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরছেন বলে শাসক দলের দাবি। কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘কাউকে আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করছি না। বালুরঘাটেও আমাদের সঙ্গে অনেকে এসেছেন। তাঁরা থাকবেনও।’’
বৃহস্পতিবার গরহাজির ছিলেন দল বদল করে বিজেপিতে যাওয়া সদস্য হিলির গৌরী মালি, বালুরঘাটের বিশ্বনাথ পাহান, কুমারগঞ্জের ইরা রায় এবং হরিরামপুরের পঞ্চানন বর্মন। ফলে আশা-আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যে একদা বিরোধীহীন শাসকদল পরিচালিত জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে এখন অহি-নকুল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তার জেরে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর জল ধর, জল ভর কার্যসূচি নিয়ে জেলা পরিষদের তরফে কোনও উদ্যোগও দেখা যায়নি। অথচ জেলায় একাধিক দিঘি ও জলাশয়কে নিয়ে গত বছর জল ধর, জল ভর প্রকল্প রূপায়ণে জোর দেওয়া হয়েছিল। হিলি ব্লকের ভালুকা বিল সংস্কার করে প্রথম বড় একটি প্রকল্প তৃণমূল পরিচালিত জেলাপরিষদের হাত ধরেই শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বালুরঘাটে সভাধিপতির জেলা পরিষদের দ্বিতীয় দিনের উপস্থিতি ছন্নছাড়া ওই পরিস্থিতিকেই সামনে এনেছে।
এ দিন রাজ্য জুড়ে ‘জল ভর’ প্রকল্প নিয়ে ছিল নানা অনুষ্ঠান। বেলা ১১টা নাগাদ জেলা পরিষদে ঢুকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া সভাধিপতি লিপিকা সিঁড়ি দিয়ে উঠে তার ঘরে গেলেন। সে সময় সিঁড়ির মুখ থেকেই নীচতলার বাঁ দিকের ঘরে বসে থাকতে দেখা যায় সহকারী সভাধিপতি ললিতা টিগ্গাকে। কেউ কারও দিকে তাকালেন না। হাত দশেক দূরে ঘরে ছিলেন সভাধিপতির সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজুদ্দিন মিঁয়া ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ চিন্তামণি বিহা। কিন্তু অর্পিতা শিবিরের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রবীর রায় কিংবা তপনের সদস্য আমজাদ আলির সঙ্গে এ দিন তাঁদের আগাগোড়া সমদূরত্ব বজায় ছিল। দল বদলের পরে বৃহস্পতিবার প্রথম দিন জেলাপরিষদে বসে সভাধিপতির সকলকে নিয়ে চলার দাবি প্রসঙ্গে পরিষদের একাংশ কর্মীর মধ্যে এ দিন সংশয়ের সুর। তাঁরা জানান, সব কাজই তো বন্ধ। জল ভর প্রকল্প হবে কী করে?
ফলে এ দিন জেলাপরিষদে এলেও সভাধিপতির কোনও কাজ ছিল না। কোনও ফাইলও তাঁর কাছে যায়নি বলে অভিযোগ। পরস্পরকে এড়িয়ে মুখ না দেখে দুপুর ২টোর মধ্যে সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি জেলা পরিষদ ছেড়ে চলে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy