Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

চড়ছে দাম, বাজারে কম পুরনো আলু

জেলার বাজারে খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক দিনের মধ্যে আলুর দর কিছুটা বেড়ে গিয়েছে।

মজুত: বিষ্ণুপুরের একটি হিমঘরে চলছে পুরনো আলু বাছাই করার কাজ। ছবি: শুভ্র মিত্র

মজুত: বিষ্ণুপুরের একটি হিমঘরে চলছে পুরনো আলু বাছাই করার কাজ। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১২
Share: Save:

হিমঘরে রাখার মেয়াদ শেষ হলেও পুরনো আলু বাজারে তেমন আসছে না। এ দিকে, জলদি আলু বাজারে এলেও তার জোগান যথেষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের মতোই আলুর দামও চড়ছে। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন গৃহস্থেরা।

জেলার বাজারে খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক দিনের মধ্যে আলুর দর কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। বিষ্ণুপুরের চকবাজারে ঘুদিন কয়েক আগেও জ্যোতি আলু ১৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। এখন তা ২২ টাকা দর উঠেছে। ক্রেতাদের প্রশ্ন, হিমঘরে মজুত আলু তো বেরিয়ে যাওয়ার কথা।

তা হলে জোগান বেড়ে গিয়ে পুরনো আলুর দাম কমার কথা। উল্টে বেড়ে গেল কেন?

তবে কি বাজারে আলুর কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে মুনাফা লোটার চেষ্টা করছেন?

হিমঘরে আলু রাখার মেয়াদ ৩০ নভেম্বর থেকে আরও ১৫ দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। তা-ও শেষ হয়েছে। তার পরেও কিছু হিমঘরে এখনও আলু মজুত রয়েছে বলে জানাচ্ছেন জেলার হিমঘর মালিকেরা।

হিমঘর মালিকদের সংগঠন সূত্রে খবর, জেলায় ৪৬টি হিমঘরে বর্তমানে বেশ কিছু পরিমাণ আলু রয়েছে। বেশির ভাগ হিমঘর থেকে আলু বের করে দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু হিমঘরে এখন আলু মজুত রয়েছে। ওই সংগঠনের সদস্য জয়দেব মাল বলেন, ‘‘যে ক’টি হিমঘরে আলু রয়েছে, আশাকরি চলতি সপ্তাহে বেরিয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’

তবে বিষ্ণুপুরের তুর্কি-সীতারামপুর এলাকার একটি হিমঘরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, হিমঘরের ভিতরে তো বটেই, লাগোয়া ছাউনির নীচেও ভর্তি পুরনো আলু। সেখানে চলছে ঝাড়াই বাছাইয়ের কাজ। ওই হিমঘরের ম্যানেজার পার্থ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখনও হিমঘরে ভিতর ২০ হাজার বস্তা আলু রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধে রাখতে হচ্ছে। তবে দু’-চার দিনের মধ্যেই সব বার করে দেব।’’

‘পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র জেলা উপদেষ্টা বিভাস দে-র দাবি, ‘‘মোটেই কৃত্রিম অভাব তৈরি করা হচ্ছে না। জলদি আলুর জোগান কম বলেই এ বার পুরনো আলুর দাম নামছে না।’’ তিনি জানান, শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, অনেক চাষিও আলু মজুত করে রেখেছেন।

বাঁকুড়া জেলা কৃষি বিপণন দফতরের জেলা আধিকারিক আকবর আলি জানান, হিমঘরে এ বার প্রায় ছ’লক্ষ ২৪ হাজার ৭২২ টন আলু রাখা হয়। এখন হিমঘরে রয়েছে ৪.৭ শতাংশ আলু। নির্দিষ্ট সময়ের পরে চাষিরা আলু না নিলে হিমঘর থেকে আলু বার করে দেওয়া হবে। তার পরেও আলু না নিলে নিয়ম মেনে নিলামে আলু বিক্রি করা হবে।

বাঁকুড়া জেলা কৃষি বিপণন দফতরের এক আধিকারিক জানান, খোলা বাজারে আলুর দাম বাড়ার অন্যতম কারণ প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশায় আলু রফতানি করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু আসত এ রাজ্যে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখনও তা এসে পৌঁছয়নি। আবার অসময়ের বৃষ্টিতে জলদি আলু চাষে দেরি হয়েছে। চাহিদা আর জোগানের ভারসাম্য না থাকায় আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Potato Cold Storage Onion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE