Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mahua Maitra

Kaali Poster Controversy: কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে যেন আঘাত না করি, মহুয়া প্রশ্নে বললেন কন্ডোম-বিতর্কে জড়ানো সায়নী

মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের আবহে সায়নীরও নাম উঠে এসেছে। বিজেপি নেতা রথীন্দ্রনাথ বসু মহুয়ার পাশাপাশি সায়নীরও গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন।

মহুয়ার ‘মা কালী’ মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন সায়নী

মহুয়ার ‘মা কালী’ মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন সায়নী

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ১৭:১১
Share: Save:

কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মা কালী নিয়ে মন্তব্যের দায় আগেই এড়িয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বার মুখ খুললেন যুব তৃণমূলের নেত্রী সায়নী ঘোষও। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় সায়নী বললেন, ‘‘গণতন্ত্রে বাক্‌স্বাধীনতার জায়গা রয়েছে। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমরা যেন কোনও ভাবেই মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করি।’’ ঘটনাচক্রে, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় অতীতের একটি ‘কন্ডোম’ সংক্রান্ত টুইট নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সায়নী। মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের আবহেও তাঁর নাম উঠে এসেছে। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ বসু একটি টুইট করেন। টুইটে মা কালী মন্তব্যের বিরোধিতা করে মহুয়া, সায়নী-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ভারতীয় পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের একটি পোস্টারে দেবী কালী রূপে এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে দানা বাঁধে নতুন বিতর্ক। এক দিকে মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে আক্রমণ শানাতে শুরু করে বিজেপি। অন্য দিকে, সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফেও টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা মহুয়ার বক্তব্যকে সমর্থন করছে না।

বুধবার মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যুৎ স্মৃতি সদনে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যোগ দেন সায়নী। সেখানে তাঁকে মহুয়ার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে প্রথমে বেজায় চটে যুবনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোথায় এসেছি? যুব সভায় না কি অন্য কোনও অনুষ্ঠানে? এখানে আপনাদের প্রথম প্রশ্ন কী হওয়া উচিত? শুভেন্দু অধিকারী কী বলেছেন, মহুয়া মৈত্র কী বলেছেন, এ সব পরের বিষয়। ওঁর (মহুয়া) যেটা মনে হয়েছে, সেটাই বলেছেন। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এখানে আর কিছু বলার থাকতে পারে না।’’ এর পরেই সায়নীর সংযোজন, ‘‘গণতন্ত্রে ফ্রি স্পিচের (বাক্‌স্বাধীনতার) যেমন জায়গা রয়েছে, তেমনই ক্রিয়েটিভিটিরও জায়গায় রয়েছে। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমরা যেন কোনও ভাবেই মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করি। আমাদের প্রত্যেকের আরও রেসপন্সিবল (দায়িত্বশীল) হওয়া উচিত।’’

প্রসঙ্গত, ‘মা কালী’ নিয়ে মন্তব্যের জন্য মহুয়ার গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি। বুধবার দুপুরে বৌবাজার থানায় মোট ৫৬টি অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যেরা। গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার রাতেই এই বিতর্ক নিয়ে একটি টুইট করেছিলেন রথীন্দ্রনাথ। টুইটে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। সেই ছবিতে বিভিন্ন তৃণমূল নেতার বিভিন্ন সময় করা মন্তব্য কেটে বসানো হয়েছে। তাতে বাগদার ‘দলবদলু’ বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি, মদন মিত্র, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পাশাপাশি সদ্য মহুয়ার করা মন্তব্য এবং সায়নীর ‘কন্ডোম’ সংক্রান্ত টুইটের অংশও রয়েছে। টুইটের ক্যাপশনে রথীন্দ্রনাথ লেখেন, ‘হিন্দু বিরোধী তৃণমূল- ধিক ধিক ধিক্কার। মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র, বিশ্বজিৎ দাস, নির্মল মাজি— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিহাদের ডাকে অনুপ্রাণিত সমস্ত নেতাকে গ্রেফতার করতে হবে।’

মহুয়াও বিজেপির উদ্দেশে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। প্রথম টুইট দেবী কালীর জয়ধ্বনি দিয়েই শুরু করেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি লেখেন, ‘জয় মা কালী! যে দেবীকে বাঙালি পুজো করে, সেই দেবী নির্ভীক এবং শান্ত।’ পরের টুইটে বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মহুয়া লেখেন, ‘ আমি কালীর উপাসক। ভয় পাই না। আর যা সত্যি তাকে ঠেকনা দেওয়ার অন্য শক্তির প্রয়োজন হয় না। বিজেপি যা করতে চায় করে নিক।’

ঘটনাচক্রে, মহুয়ার মতো গত বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে সায়নীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। অভিনেত্রীর একটি পুরনো টুইটের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তথাগত তাঁর টুইটার প্রোফাইলে অভিযোগপত্রের একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেই সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে সায়নীর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি গ্রাফিক শেয়ার করা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, একটি শিবলিঙ্গের ছবিতে কন্ডোম পরাচ্ছেন এক মহিলা। গ্রাফিক থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহিলাকে এডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাফিকের ভিতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, ‘এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না ঈশ্বর।’ ওই টুইট তুলে এনেই সায়নীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahua Maitra Saayoni Ghosh TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE