জিতেন্দ্রকে কার্যত অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁর আইনজীবী। ছবি: সংগৃহীত।
সুপ্রিম কোর্টে বাংলার পুলিশের বিরুদ্ধে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে অপহরণের অভিযোগ আনলেন তাঁর আইনজীবী। এই ‘গুরুতর’ অভিযোগের জবাব দিয়ে রাজ্য সরকারকে দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের নয়ডার কাছে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেফতার করা হয় আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্রকে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে আসানসোলে একটি কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় জিতেন্দ্র অভিযুক্ত। তিনি ছাড়াও তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি এবং আসানসোলের অন্য দুই বিজেপি নেতা অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন। কলকাতা হাই কোর্টে আগাম জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর জিতেন্দ্র, বিজেপি কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত এবং দলের যুবনেতা তেজপ্রতাপ সিংহ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন একই আর্জি নিয়ে। সেই মামলারই শুনানি ছিল সোমবার। আর নয়ডা থেকে গ্রেফতার করে আনা জিতেন্দ্রকে রবিবারই ৮ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়ে দিয়েছে আসানসোলের আদালত।
এই প্রেক্ষিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করতে ওঠেন জিতেন্দ্রর আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়া। তিনি তাঁর মক্কেলকে অপহরণ করার অভিযোগ তোলেন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, বাংলার পুলিশ আইন বা রীতিনীতির তোয়াক্কা না করেই গ্রেফতার করেছে জিতেন্দ্রকে। তাঁর যুক্তি ছিল, আগাম জামিনের মতো মামলা মাঝপথে থাকলে, রীতি অনুযায়ী পুলিশ কোনও কঠোর পদক্ষেপ করে না। এই ‘রীতিলঙ্ঘন’ ছাড়াও, জিতেন্দ্রকে কার্যত অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁর আইনজীবী।
ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং জেকে মাহেশ্বরী এই ‘অপহরণ’ তত্ত্বের ব্যাখ্যা চান পাটোয়ালিয়ার কাছে। জিতেন্দ্রর আইনজীবী শীর্ষ আদালতের সামনে দু’টি ‘তথ্য’ তুলে ধরেন। এক, ভিন্রাজ্য থেকে বাংলার পুলিশ এক জনকে তুলে নিয়ে গেল সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশকে বা স্থানীয় থানাকে কিছু না জানিয়েই। দুই, গ্রেফতারের পর স্থানীয় আদালতে পেশ করে তাঁকে রিমান্ডে না চেয়ে, সরাসরি জিতেন্দ্রকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বাংলায়। এর পরেই দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, জিতেন্দ্রর আইনজীবীর অভিযোগের জবাব দিয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে বাংলার প্রশাসনকে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২ সপ্তাহ পর।
জিতেন্দ্রর সঙ্গে আরও যে দুই বিজেপি নেতা আগাম জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, সেই গৌরব এবং তেজপ্রতাপের গ্রেফতারিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, জিতেন্দ্র তিওয়ারির গ্রেফতারির উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তথ্যগত এবং আইনগত, দু’দিক থেকেই এটি ভুল। গ্রেফতার হয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা জিতেন্দ্রর গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ হওয়ার প্রশ্নই ছিল না। অনিচ্ছাকৃত এই গুরুতর ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy