Advertisement
০২ মে ২০২৪
poor road condition

রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ, টাকা খুঁজছে রাজ্য

সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় (গ্রামীণ) ৯৩২৯ কোটি, একশো দিনের কাজে ৬৫৬১ কোটি এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ২১০৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

রাস্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

রাস্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০৪
Share: Save:

রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। কিন্তু বেহাল রাস্তা মেরামতের টাকা রাজ্যের ভাঁড়ারে নেই। প্রশাসনের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ক্ষোভ প্রশমনে পঞ্চায়েত দফতরের জন্য জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা শুরু হয়েছে সরকারের শীর্ষ মহল। ওই সূত্রের দাবি, একে টাকা বাড়ন্ত, তার উপরে সড়ক প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা আটকে থাকায় এই তৎপরতা।

এক আধিকারিকের কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাস্তার কাজ খুবই জরুরি। বহু রাস্তা রাজ্যকে নিজের টাকায় করতে হয়। অথচ রাজকোষের যা হাল, তাতে চাইলেই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই কোন দফতরের থেকে কত অর্থ পাওয়া যেতে পারে, তার হিসাব কষা হচ্ছে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, টাকা জোগাড় নিয়ে কয়েকটি বৈঠকও হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনও পথ বেরিয়েছে কিনা, তার সদুত্তর মেলেনি। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “চলতি আর্থিক পরিস্থিতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া অন্য কাজে ব্যয় নিয়ন্ত্রিত রাখার কথা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে রাজ্য। তাই কম গুরুত্বপূর্ণ কাজের অর্থ বাঁচানো গেলে তা এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হতে পারে।”

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গ্রামে রাস্তার পরিস্থিতি বরাবরই স্পর্শকাতর বিষয়। তৃণমূল সরকার গোড়া থেকেই সে দিকে নজর দিয়েছিল। বিপুল পরিমাণ গ্রামীণ রাস্তাও তৈরি হয়। কিন্তু অর্থাভাবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেনি। তার প্রভাব পড়তে পারে পঞ্চায়েতের ভোটে। এই ক্ষোভের কথা সরকারি সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সূত্রের দাবি, মানুষের অভাব, অভিযোগ এবং চাহিদার সুলুকসন্ধানে নানা পদক্ষেপ করছে সরকার। একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গ্রামে রাস্তা নিয়ে মানুষের চাহিদাই সব থেকে বেশি।

ঘটনাচক্রে, ইতিপূর্বেই জেলাশাসক এবং জেলা পরিষদগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে রাস্তার ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছিল পঞ্চায়েত দফতর। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ রাস্তাগুলির ক্ষেত্রে জেলা, ব্লক, রাস্তার নাম, তার দৈর্ঘ, রাস্তার চরিত্র, রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন কি না, শেষ কবে রক্ষণাবেক্ষণ হয়েছে, কত টাকা দরকার সেই তথ্য দিতে বলা হয়েছিল।

টাকার অভাব প্রসঙ্গে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় (গ্রামীণ) ৯৩২৯ কোটি, একশো দিনের কাজে ৬৫৬১ কোটি এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ২১০৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে গত বছরের তুলনায় এ বার প্রায় ১১৯৮ কোটি টাকা বেড়েছে পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট প্রস্তাব। তা হলে অভাব কেন? সরকারি কর্তাদের ব্যাখ্যা, চলতি পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ দফতরেরই বরাদ্দের পুরো অর্থ পেতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ, ধার শোধ, বেতন-পেনশন বা দৈনন্দিন খরচ বাদে বিভিন্ন কল্যাণ প্রকল্পে রাজ্যের বিপুল বরাদ্দ বেড়েছে। অতিরিক্ত হিসাবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ডধারীদের বিকল্প কাজের সুযোগ দিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে সরকারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

poor road condition Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE