তিন বছরের রুদ্রনীল রায়কে শ্বাসরোধ করেই হত্যা হয়েছিল। জানা গেল ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। তদন্তকারীদের অনুমান, সোমনাথ এবং তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায় আগে ছেলেকে খুন করেন। তার পর নিজেরাও ওই ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের আত্মহত্যার বিষয়টি ময়নাতদন্তে নিশ্চিত করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিশুটির নাক এবং ঠোঁটে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার মুখে কিছু চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছিল। তার ফলে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কে এই কাজ করেছিলেন, এখনও স্পষ্ট নয়।
কসবাকাণ্ডের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে বুধবার। তাতে বলা হয়েছে, শিশুটির মৃত্যুর কারণ শ্বাসরোধ। সুমিত্রা এবং সোমনাথকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। সুমিত্রার ঘাড়ে দড়ির দাগ ছিল। ডান দিকে মাথার পিছন দিকের ত্বক থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ডান চোখ কালো হয়ে গিয়েছিল। গলায় দড়ি দিয়ে ঝোলার কারণেই এই আঘাত, দাবি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। সোমনাথের ক্ষেত্রে ঘাড় এবং গলায় একটিই দড়ির দাগ পাওয়া গিয়েছে। এই দাগও গলায় দড়ি দিয়ে ঝোলার কারণে তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার সকালে কসবার হালতু এলাকায় একটি বাড়ি থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। সোমনাথের ঝুলন্ত দেহের সঙ্গে কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল শিশুপুত্রের দেহটি। ঘরের দেওয়ালে পাওয়া যায় ‘সুইসাইড নোট’। সেখানে সোমনাথের মামা এবং মামির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কথা লেখা ছিল। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর মামা প্রদীপকুমার ঘোষাল এবং মামি নীলিমা ঘোষালকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বুধবার তাঁদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাজারে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ঋণ ছিল সোমনাথের। পেশায় অটোচালক সোমনাথ আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর সন্তানের শারীরিক সমস্যা ছিল। অসুস্থতার কারণে তাঁর ওষুধ এবং চিকিৎসার জন্যেও অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে মামা-মামির সঙ্গে ছিল বিবাদ। সে সব কারণেই দম্পতি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। আদালতে প্ররোচনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মামা-মামি। তাঁদের দাবি, করের রসিদ না-দেওয়া নিয়ে সোমনাথদের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু আত্মহত্যায় কোনও প্ররোচনা দেওয়া হয়নি।