ইসলামাবাদের পর এ বার মুরিদকে। সোমবার ভোর থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হলেন পাকিস্তানের ইসলামি রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)–এর একাধিক সমর্থক। গোলাগুলিতে প্রাণ গেল পঞ্জাব পুলিশের এক আধিকারিকেরও। টিএলপি-র সূত্রকে উদ্ধৃত করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পুলিশের গুলিতে টিএলপি-র প্রধান সাদ রিজ়ভিও জখম হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে খবর।
গাজ়ায় ইজ়রায়েলের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং শাহবাজ় শরিফের সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে শুক্রবার থেকে রাস্তায় নেমেছেন টিএলপি–র লাখ লাখ সমর্থক। পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবারও গভীর রাত থেকে মুরিদকের কাছে জড়ো হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। ইসলামাবাদের উদ্দেশে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাহোর এবং ইসলামাবাদ সংলগ্ন বেশির ভাগ এলাকা ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশবাহিনী।
ভোর ৩টে নাগাদ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় টিএলপির সমর্থকদের। ছোড়া হয় শেল, কাঁদানে গ্যাস। প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলার পর বেলার দিকে পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পঞ্জাব পুলিশের মুখপাত্র মুবাসির হুসেন জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শেখপুরার স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) শাহজ়াদ নওয়াজ় নিহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন তিন জন বিক্ষোভকারীও। এ ছাড়াও, পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবারের বিক্ষোভে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৪৮ জন সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাকিদের গুলি না লাগলেও তাঁরাও বেশ জখম। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
গাজ়ায় ইজ়রায়েলের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার থেকেই ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডির রাস্তায় নেমেছে টিএলপি। শুধু তা-ই নয়, শাহবাজ় শরিফ সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই আবহে শুক্রবার মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক দেয় টিএলপি। তার পর থেকে গত তিন দিনে উত্তেজনা কমেনি এলাকায়। টিএলপি-র দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ‘হাতের পুতুল’ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান সরকার এবং পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। প্রসঙ্গত, টিএলপি হল তেহরিক-ই-লাবাইক ইয়া রসুল আল্লাহ (টিএলওয়াইআর)-এর রাজনৈতিক শাখা। প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তারা।