Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

লকডাউন তোলার পরিকল্পনা, সমালোচিত জনসন

স্কটল্যান্ড, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলস অবশ্য বরিসের এই সিদ্ধান্ত মানছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন। সামনের সারিতে বসে বক্তৃতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার লন্ডনে। এএফপি

পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন। সামনের সারিতে বসে বক্তৃতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার লন্ডনে। এএফপি

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

দেশকে পাঁচটি জ়োনে ভাগ করে লকডাউন শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যদিও বরিসের সমালোচনা করে বিরোধীদের বক্তব্য, এই বিষয়টিতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি সিদ্ধান্তটি বিভাজনকারী বলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

স্কটল্যান্ড, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলস অবশ্য বরিসের এই সিদ্ধান্ত মানছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

গত কাল জনসন জানান, পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আগামী মাস থেকেই ইংল্যান্ডে সমস্ত স্কুল এবং কিছু দোকান খুলতে পারে। তবে রেস্তরাঁগুলিকে জুলাই থেকে খোলার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এমনকি, যাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করতে পারছেন না (মূলত কারখানার কর্মী ও নির্মাণকর্মী), তাঁদের কাজে ফিরতেও উৎসাহিত করছে বরিস সরকার। সে ক্ষেত্রে অবশ্য গণপরিবহণ এড়িয়ে হেঁটে, সাইকেলে কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে কর্মস্থলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বরিস। এ ছাড়া নাগরিকেরা শারীরচর্চার জন্য দিনে দু’বার বেরোতে পারবেন বলেও জানান। পরিবারের সদস্যেদের সঙ্গে লং ড্রাইভে বেরোনোর অনুমতিও দেওয়া হবে। গল্ফ, টেনিস শুরুরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। হিথরো বিমানবন্দরে নামার পরে যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়রান্টিনের ঘোষণাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এ সবই শর্তসাপেক্ষে কার্যকর করা হবে। সংক্রমণ বাড়লেই ফের লকডাউনে ফেরার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

তবে এই গণপরিবহণ এড়ানোর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তাদের বক্তব্য, অধিকাংশেরই ব্যক্তিগত গাড়ি নেই। দূরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কী ভাবে হেঁটে বা সাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব? শিল্পপতিদের খুশি করতেই কি নির্মাণকর্মীদের কাজে ফেরানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একান্তই যদি গণপরিবহণ ব্যবহার করতে হয়, সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। পাশাপাশি, কাজে ফেরার ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

লেবার নেতা কাইর স্টার্মার জানিয়েছেন, কোনও রকম প্রস্ততি ছাড়াই মানুষকে কাজে ফেরাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। লেবার নেতা এড মিলিব্যান্ড, অ্যান্ডি ম্যাকডোনাল্ডও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিজ়নেস সেক্রেটারি অলোক শর্মাকে লেখা চিঠিতে তাঁরা জানান, কোনও রকম নির্দেশিকা ছাড়াই কর্মীদের কাজে ফেরানোর সিদ্ধান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় ও ভুল। কর্মক্ষেত্রে দূরত্ববিধি পালনের নির্দেশিকা জারিরও দাবি করেছেন তাঁরা। বরিসের বক্তব্যের পরেই লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, লন্ডনে দূরত্ববিধি পালন করা হবে। তিনিও গণপরিবহণ এড়ানোর বার্তা দিয়েছেন।

স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন জানিয়েছেন, ঘরেই থাকতে হবে নাগরিকদের। পিকনিক, সানবাথের উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকছেই। বরিসের বক্তব্য নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেউ কাজে যাবেন কি না, এই নিয়ে বলার জায়গায় নেই, তবে রিটেল সেক্টর, ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর ও নির্মাণ ক্ষেত্রে নজর রাখা হবে।’’ ‘বাড়িতে থাকুন, সুস্থ থাকুন’ এই স্লোগানও অনুসরণ করে চলা হবে বলে জানিয়েছেন নিকোলা।

আরও পড়ুন: যেন ‘দাবানল’ ছুটে যাচ্ছে, কিন্তু গাছ-ঘাস কিছুই পুড়ছে না আগুনে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE