ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের ‘পরিণতি’ হবে পড়শি দেশ ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত একনায়ক সাদ্দাম হুসেনের মতো। মঙ্গলবার এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ়। সাদ্দামের ফাঁসির প্রসঙ্গ তুলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশের স্বৈরাচারী শাসকের কী চরম পরিণতি হয়েছিল, ইরান যেন তা মনে রাখে।’’
ঘটনাচক্রে, ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার খামেনেইকে খুন করতে সক্রিয় ছিল বলে রবিবার রয়টার্স প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদন দাবি করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আভিভের ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। অন্য দিকে, নেতানিয়াহু রবিবার প্রকাশ্যে তেহরানে ক্ষমতার পালাবদলে সক্রিয় হওয়ার জন্য ইরানের আমজনতার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। ঠিক যেমন ভাবে দু’দশক আগে সাদ্দামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সময় ইরাকের জনতার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।
২০০৬ সালে গণহত্যার অভিযোগে সাদ্দামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল ইরাকের মার্কিন মদতপুষ্ট সরকার। তার আগে তিনি ইরাকের সর্বময় কর্তা ছিলেন একনাগাড়ে প্রায় চার দশক। দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে সেই সাদ্দামকেই মার্কিন সেনাবাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল ইরাকের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে। লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল মাটির তলার বাঙ্কারে। দিনের পর দিন। তার পর এক দিন সাদ্দামকে সেই বাঙ্কার থেকেই টেনে হিঁচড়ে বার করে এনেছিল মার্কিন সেনারা।
গ্রেফতারির পরে সাদ্দামের বিচার হয়েছিল মার্কিন মদতপুষ্ট নতুন ইরাকি সরকারের আদালতে। আর সেই বিচারের শুনানিও ঘটা করে অনেক দিন ধরে চালানো হয়েছিল। সেই মামলায় এমনকি, সাদ্দামকে তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনে সওয়ালও করতে দেওয়া হয়েছিল। তার পর তাঁর সাজা হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড। এমনকি, ফাঁসি দেওয়ার ভিডিয়োও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেটে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের উদাহরণ তুলে এ বার তেহরানের উপর চাপ বাড়াল তেল আভিভ।