Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Haj House

সুস্থ হয়ে ফিরছেন আক্রান্তেরা, স্বস্তি হজ হাউসে

পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটির এগজিকিউটিভ অফিসার নকি বলছেন,  ‘‘এই কেন্দ্রের সবাই ভাল আছেন। এটাই সব থেকে বড় বিষয়।’’ 

গত ৩১ মার্চ মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হজ হাউসে কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি হয়েছিল।—ফাইল চিত্র।

গত ৩১ মার্চ মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হজ হাউসে কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি হয়েছিল।—ফাইল চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের স‌ংখ্যা কমছে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। নিউ টাউনের হজ হাউসে তাই খানিকটা স্বস্তির পরিবেশ। দিন-রাত এক করে আক্রান্তদের সেবা করা লোকজনও খানিকটা অবসর পাচ্ছেন। এক দিনের জন্য বাড়ি যাওয়ার ছুটিও মিলেছে এক আধিকারিকের।

গত ৩১ মার্চ মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিউ টাউনের মদিনাত-উল-হুজ্জাজ-এ (হজ হাউস) কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি হয়েছিল। তার পরে সেখানে দিনরাত কাটিয়ে কেন্দ্রে থাকা তিনশোর মতো মানুষের প্রতিটি বিষয়ে নজর রাখছিলেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্ত নিগমের জেনারেল ম্যানেজার মহম্মদ নকি। তিনি জানান, ওই কেন্দ্রে থাকা অনেকেই এখন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তাই তিনিও একটু অবসর পেয়েছেন। সেই কারণে সোমবার এক দিনের জন্য বাড়ি যেতে পেরেছেন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নকি। আজ, বুধবার আবার হজ হাউসে ফিরে যাবেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটির এগজিকিউটিভ অফিসার নকি বলছেন, ‘‘এই কেন্দ্রের সবাই ভাল আছেন। এটাই সব থেকে বড় বিষয়।’’

এখন আর তিনশো মানুষ সেখানে নেই। বর্তমানে ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রয়েছেন ১২৬ জন। তবে তাঁরা কেউ এ রাজ্যের বাসিন্দা নন। বাংলার বাসিন্দারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ১২৬ জনের মধ্যে বিভিন্ন দেশের ১০৮ জন নাগরিক রয়েছেন। বাকি ১৮ জনের মধ্যে ১৪ জন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। দু’জন ওড়িশার। এই ১৬ জনও হয়তো শীঘ্রই বাড়ি চলে যাবেন। এ ছাড়া এক জন কেরলের এবং এক জন তেলঙ্গানার মানুষ রয়েছেন। সবাইকে শারীরিক পরীক্ষা করার পরে সুস্থ মনে করলে তবেই ছাড়া হয়েছে বলে আধিকারিকেরা জানান।

ওই কেন্দ্রে থাকা দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু’জন করে বাসিন্দার রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়েছিল। তাঁদেরকে হাসপাতালেও পাঠানো হয়। পরে তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। সূত্রের খবর, এই কেন্দ্রে যাঁরা ছিলেন বা আছেন তাঁদের কয়েক জন দিল্লির তবলিগি জামাতের জমায়েতেও ছিলেন। করোনা আবহে সেই জমায়েত দেশের চর্চায় উঠে আসে। তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও হয়েছে।

হজ হাউস সূত্রের খবর, রমজান মাস চলায় ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে সকলেই রোজা রাখছেন। রোজা রাখায় যাতে সমস্যা না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখছেন দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। এমনকি, যে পাঁচটি দেশের বাসিন্দা এই কেন্দ্রে রয়েছেন, তাঁদের কোনও বিশেষ খাবার প্রয়োজন কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। সেই অনুযায়ী যাতে খাবার তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও হয়েছে।

‘‘কারও যাতে মনে না হয় যে তাঁরা বিদেশ-বিভুঁইয়ে রয়েছেন, তাই পছন্দের খাবার দেওয়া হচ্ছে।’’— বলছেন এক আধিকারিক। নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হচ্ছে অনেক

দেশই। তা জানার পরেই বাড়ি ফেরার আর্জি জানাতে শুরু করেছেন

ওই বিদেশিরাও।

এই কেন্দ্রে যাতে কারও কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য সেখানে পাঁচটি তলাতেই থাকা কয়েক জনকে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও তৈরি হয়েছিল। তাতে নিউ টাউন

কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটির লোকজন ও কেন্দ্রের পরিচালকেরাও ছিলেন। রাজ্য হজ কমিটির এগজিকিউটিভ অফিসার জানাচ্ছেন, সুষ্ঠ পরিষেবা দেওয়ায় গ্রুপটি সহায়ক হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম এশিয়া বা মধ্য প্রাচ্য থেকে আসা নাগরিকদের রাখার জন্য এই কেন্দ্রটি ব্যবহার করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haj House Coronavirus in Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE