Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Old Man

দু’দিন ফুটপাতে পড়ে প্রৌঢ়, উদ্ধারে হকার

এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশ ও পুরসভার ভূমিকা। প্রশ্ন উঠেছে সহনাগরিকদের ভূমিকা নিয়েও।

অসুস্থ: শ্যামবাজারের ফুটপাতে তখনও পড়ে সেই প্রৌঢ়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ: শ্যামবাজারের ফুটপাতে তখনও পড়ে সেই প্রৌঢ়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ০৪:২৬
Share: Save:

দু’দিন ধরে ফুটপাতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রইলেন বছর ষাটের এক প্রৌঢ়। অভিযোগ, পুলিশ বা পুরসভা কেউই তাঁকে হাসপাতালে পাঠাতে উদ্যোগী হয়নি। এগিয়ে আসেননি স্থানীয় লোকজনও। শেষে বুধবার এলাকার এক হকার থানা থেকে পিপিই জোগাড় করে ওই প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করলেন। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশ ও পুরসভার ভূমিকা। প্রশ্ন উঠেছে সহনাগরিকদের ভূমিকা নিয়েও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাগবাজারের বাসিন্দা পার্থ মজুমদার নামে ওই ব্যক্তি লকডাউন শুরুর আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর উল্টো দিকে বিধান সরণির ফুটপাতে থাকতে শুরু করেন। গত পাঁচ মাস সেখানেই থাকছিলেন। আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা ও এলাকার হকারেরা যে যেমন পারতেন তাঁকে খাবার দিতেন। গত সোমবার পার্থবাবুর জ্বর আসে। জ্বর বেড়ে যাওয়ায় তিনি অজ্ঞান হয়ে দু’দিন ফুটপাতেই পড়ে ছিলেন। অভিযোগ, করোনার আতঙ্কে কেউই তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেননি।

শেষে এগিয়ে আসেন স্থানীয় এক হকার মৃণাল রায়। তিনি এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ ঘটনাটি জানান শ্যামপুকুর থানায়। সেখান থেকে খবর যায় পুরসভায়। কিন্তু দুই পুরকর্মী পিপিই পরে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এলেও তাঁরা ওই প্রৌঢ়কে নিয়ে যেতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। শেষে দুপুর ১টা নাগাদ মৃণালবাবু ফের থানায় যোগাযোগ করে পিপিই কিট জোগাড় করেন। থানাকে অনুরোধ করেন, তারা যেন স্বাস্থ্য ভবনে খবর দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে বলে। ওই হকারই পার্থবাবুকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

আরও পড়ুন: পড়ে মৃত্যু করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের

প্রশ্ন উঠেছে, এক জন হকারকে কেন যাবতীয় ব্যবস্থা করতে হল? এ ব্যাপারে শ্যামপুকুর থানার তরফে দাবি, পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সে দুই কর্মী পিপিই কিট পরে ছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁরা প্রৌঢ়কে তুলতে রাজি হননি। যেটা মূলত তাঁদেরই দায়িত্ব। সুতরাং এ ক্ষেত্রে থানার কোনও গাফি‌লতি নেই।

অন্য দিকে স্থানীয় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনাটি অনভিপ্রেত। বিষয়টি জানতাম না। পাড়ার পরিচিতেরাও আমাকে কিছু জানাননি। পরে জানতে পেরে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে ওই প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সকলকে বলব, এমন কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অথবা স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরকে অন্তত জানান।’’ আর গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে মৃণালবাবু বলছেন, ‘‘আমি এমন কিছুই করিনি। মানুষের পাশে থাকতে পারাই বড় কথা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Old Man Coronavirus in Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE