গোপাল তিওয়ারি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় চার বছর ধরে মামলা চলল, কিন্তু আদালতে কিছুই প্রমাণ করতে পারল না কলকাতা পুলিশ। আরও স্পষ্ট করে বললে, পুরভোটের সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণই জোগাড় করে উঠতে পারেনি তারা। ফলে, উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বৃহস্পতিবার ছাড়া পেয়ে গেলেন ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গোপাল তিওয়ারি-সহ ১৩ জন।
২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল কলকাতায় পুরসভার নির্বাচন ছিল। ভোটের দিন গিরিশ পার্কের সিংহিবাগানে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তৎকালীন গিরিশ পার্ক থানার সাব ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় গোপালের। ওই দিনই মধ্য কলকাতার তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীর দলীয় অফিস থেকে দু’জন তৃণমূল-সমর্থক গ্রেফতার হন। পরে গোয়েন্দারা পাকড়াও করেন গোপাল-ঘনিষ্ঠ আরও চার জনকে। এর পর ধরা পড়েন গোপালও। উত্তর কলকাতার মানুষ গোপালকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসাবেই চেনেন। সাড়ে চার বছর আগের ওই ঘটনায় তাঁকে ধরতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি পুলিশের।
সম্প্রতি কলকাতা নগর দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়। বৃহস্পতিবার ছিল রায় ঘোষণা। রায়ে বিচারক এ দিন গোপাল-সহ ১৩ জন অভিযুক্তকেই প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দেন। তার পরেই আইনজীবী মহলে প্রশ্ন উঠছে, যাঁকে মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ, তাঁর বিরুদ্ধে কেন যথেষ্ট প্রমাণ জোগাড় করতে পারল না লালবাজার? পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, গোপাল কি আদৌ ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল না? না কি পুলিশের সঙ্গে কোনও ‘বোঝাপড়া’ হয়েছে?
আরও পড়ুন: দৌড়চ্ছে সিবিআই, হাইকোর্টে আগাম জামিনের শুনানি আজ, কী আছে রাজীবের ভাগ্যে?
সেই সময় গুলিতে জখম হওয়া সাব ইনস্পেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল বর্তমানে কসবা থানার অতিরিক্ত ওসির দায়িত্বে রয়েছেন। পুলিশকর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় গোপাল -সহ মোট ১৩ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ এক গুচ্ছ ধারায় অভিযোগ এনেছিল কলকাতা পুলিশ। গোপাল ওই বছরের ২৮ মে পুলিশের জালে ধরা পড়েন। মামলা চলাকালীন ১৩ জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও ছ’জনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল বলে আদালত সূত্রে খবর। ২০১৭ সালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর সেই মামলার বিচারপর্ব শেষ হয়েছে। এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। গত এপ্রিলে জামিন চেয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গোপাল। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিচারপর্ব শেষ করতে নির্দেশ দেয় বলে আদালত সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: ‘ছাড়পত্র দিয়েছিল ভারতই’, মেহুলকে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্তব্য অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রীর
সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় এ দিন রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের জানান, ‘‘আমরা এই মামলায় যথেষ্ট খেটেছিলাম। বিচারক যদি মনে করেন, অভিযুক্ত দোষী নন, তা হলে তাঁর রায় আমাদের মেনে নেওয়া উচিত। এখনও রায়ের কপি হাতে পাইনি। সেটা খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে যা বলার বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy