গুলি করার পর পড়ে রয়েছে কুকুরের মৃতদেহ। —নিজস্ব চিত্র
নিজেকে মানবাধিকার কর্মী বলে পরিচয় দিতেন। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য কালীঘাটের ওই বাসিন্দা সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ সেই তিনি নিজের শুটার রাইফেল দিয়ে একটি পথকুকুরকে গুলি করে মারলেন! গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ পশুপ্রেমীরা। তাঁরা সৌগতের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। এ নিয়ে তাঁরা বড়সড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে কালীঘাট রোড এলাকার বাসিন্দারা দেখেন, রাস্তার উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে একটি পথকুকুর। এলাকাতেই কুকুরটিকে দীর্ঘ দিন ধরেই ঘুরে বেড়াতে দেখতেন তাঁরা। এর পরেই তাঁরা কালীঘাট থানায় খবর দেন। সেখানে অভিযোগও দায়ের করেন। প্রথমে বোঝাই যায়নি, কুকুরটিকে গুলি করে মারা হয়েছে! কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সৌগতবাবুই ওই পথকুকুরটিকে রাইফেলের গুলি ছুড়ে মেরেছেন। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা ছাড়াও তাঁর ০.২২ শুটিং রাইফেলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। কী কারণে ওই যুবক এ পথ কুকুরটিকে গুলি করতে গেলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি একটি শুটিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন সৌগত। তার পর থেকেই শুটিং রাইফেল দিয়ে পাখি মারা চেষ্টা করতেন ওই যুবক। বৃহস্পতিবার কুকুরটির ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই রিপোর্টে জানা যায়, কুকুরটির মাথায় গুলি করা হয়েছিল। গুলি মাথার ভিতরেই আটকে যায়। অভিযুক্ত সৌগতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৯ ধারায় মামলা রুজু হয়। এ ছাড়াও ২৭ আর্মস অ্যাক্ট এবং ১১এল প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলিটি অ্যানিম্যাল অ্যাক্টেও মামলা রুজু হয়। এ দিন তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
আরও পডু়ন: দেবশ্রী-পর্ব দুঃস্বপ্ন, তা ভুলে যান, শোভনদের বার্তা শিব প্রকাশের, রাখি বাঁধলেন বৈশাখী
আরও পড়ুন: পাখির ধাক্কায় বিকল ইঞ্জিন, ভুট্টাখেতে বিমান নামিয়ে ২৩৩ জনের প্রাণ বাঁচালেন পাইলট
এই ঘটনার পর মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শূর বলেন, “পশুদের নিয়ে অনেকেরই অনুভূতি কম। বিশেষ করে পথকুকুরদের বিষয়ে দেখভাল একেবারেই হয় না। এমন ঘটনা সত্যি বেদনাদায়ক। ওই যুবকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।” চলতি বছরের শুরুতে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে কুকুর ছানা পিটিয়ে খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয় গোটা রাজ্যে। ওই ঘটনাতে পথে নেমেছিলেন ‘কলকাতা স্ট্রিট ডগ ফোরাম’-এর সদস্যরা। এ ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পশুপ্রেমীরাও সরব হন। দেবাঞ্জন সরকার নামে এক পশুপ্রেমী জানিয়েছেন, “কড়া আইন প্রয়োগ করা উচিত। যিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাঁর কেন জামিন হয়ে গেল। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।” প্রয়োজনে আন্দোলনে নামার কথাও বলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy