Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Khejuri

ত্রাণে নিয়ে ক্ষোভ, চাই আরও ত্রিপল

খেজুরি-১ ব্লকের টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শবর পাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, গত বুধবার থেকে গাছের নিচে দিন কাটাতে হচ্ছে।

 প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০২:৪৭
Share: Save:

একসপ্তাহ আগের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে খেজুরি। কয়েক হাজার পাকা ও কাঁচা বাড়ি এবং এক হাজারের বেশি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। সেই সব গাছ এবং খুঁটি এখন সরানো না হওয়ায় ‘অবরুদ্ধ’ খেজুরির সব জায়গায় প্রশাসনিকভাবে ত্রাণ পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দাদের। ত্রাণ এবং ত্রিপলের দাবিতে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।

খেজুরি-১ ব্লকের টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শবর পাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, গত বুধবার থেকে গাছের নিচে দিন কাটাতে হচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে ত্রাণ বিলি করা দূরে থাক, ত্রিপলটুকু দেওয়া হয়নি। একই অভিযোগ খেজুরি-২ ব্লকের হলুদবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি ভাবে তাঁদের কাছে মাথা গোঁজার মতো ত্রিপলও দেওয়া হচ্ছে না। মানসিংহবেড় এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ পরিষেবা না থাকায় গ্রামীণ সজল ধারা প্রকল্পগুলি একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। ওই এলাকার মহিলারা জানাচ্ছেন, ভ্যান রিকশা ভাড়া করে চার কিলোমিটার দূরে গিয়ে পানীয় জল আনতে হচ্ছে।

খেজুরি-১ করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখে জমায়েত কম করার জন্য পর্যায়ক্রমে গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে খেজুরি-১ ব্লকের বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ এবং ত্রিপল পাওয়া যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্তদের আপেক্ষিক গুরুত্ব বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে তাঁদের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কেউ যদি না পেয়ে থাকে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে

দেখা হচ্ছে।’’

বিজেপি অবশ্য এ জন্য তৃণমূলকে দায়ী করছে। জেলা (কাঁথি) সাংগঠনিক সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘খেজুরিতে তৃণমূল করে এমন লোকেদের আগে বেছে বেছে ত্রাণ এবং ত্রিপল দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনকে চাপ দিয়েই এসব কাজ করাচ্ছে শাসক দল।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীম মণ্ডল বলেন, ‘‘চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ চলছে। যাঁদের বেশি ক্ষয়ক্ষতি, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওযা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে সবাই ত্রাণ পাবেন।’’

এই পরিস্থিতিতে বুধবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে খেজুরি-২ ব্লকের পাচুড়িয়া, ওয়াসিল চক সহ ১৫টি গ্রামে শতাধিক পরিবারের হাতে শুকনো খাবার তুলে দেওয়া হয়।

এদিকে, ত্রাণের দাবিতে বিজেপি বুধবার এগরা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের অভিযোগ, সামান্য কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ত্রিপল দিয়ে দায় সেরেছে পুরসভা। বিক্ষোভে ছিলেন বিজেপি’র এগরা নগর মণ্ডলের সভাপতি স্বাধীন দাস ও প্রাণাশিস চৌধুরী প্রমুখ। এগরার পুর প্রশাসক শঙ্কর বেরা অবশ্য বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আগে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। কিছু মানুষ ভুল বুঝে বিক্ষোভ দেখিয়ে ছিল। সবার অভিযোগ খতিয়ে দেখে সমস্যা সমাধান করা হবে’’

ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব না করা, বিদ্যুৎ লাইনের মেরামতি ও পানীয়জল সরবরাহ ঠিক করার দাবিতে এ দিন তমলুকে আবার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেস। ওই কর্মসূচিতে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি দীপক দাস, প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক ক্ষিতীন্দ্রমোহন সাহু এবং জেলা কংগ্রেস নেতা সনৎ বটব্যাল ও মৃণালকান্তি পাল, সিপিআই জেলা সম্পাদক তথা তমলুকের বিধায়ক অশোক দিন্দা প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khejuri Cyclone Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE