Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

খুদেকে নেবুলাইজার যন্ত্র দিল হাসপাতাল

চন্দ্রকোনা থানার ঝাঁকরা ঘেঁষা শ্রীরামপুরের কালীমোহন ঘোষ জন্ম থেকেই সেরিব্রাল পলসি রোগে আক্রান্ত। বাবা গোবিন্দের ছোট ভুষিমাল দোকান। মা মণিমালা সংসার সামলান।

কালীমোহনের মায়ের হাতে যন্ত্র তুলে দিচ্ছেন সুপার। নিজস্ব চিত্র

কালীমোহনের মায়ের হাতে যন্ত্র তুলে দিচ্ছেন সুপার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০২:২৪
Share: Save:

সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত শিশুর পাশে দাঁড়াল হাসপাতাল। শুক্রবার নিজস্ব তহবিল থেকে সাড়ে চার বছরের ওই শিশুর জন্য নেবুলাইজার যন্ত্র কিনে দিলেন ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চন্দ্রকোনা থানার ঝাঁকরা ঘেঁষা শ্রীরামপুরের কালীমোহন ঘোষ জন্ম থেকেই সেরিব্রাল পলসি রোগে আক্রান্ত। বাবা গোবিন্দের ছোট ভুষিমাল দোকান। মা মণিমালা সংসার সামলান। কালীমোহন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। প্রায়শই শ্বাসকষ্টে ভোগে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর সমস্যা হয়। বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না। মানসিক বৃদ্ধির বিকাশেও ঘাটতি থাকে। স্বাভাবিক চলাফেরা, কথা বলা, কানে কম শোনার সমস্যায় ভোগে রোগীরা। অসুস্থ হলেই কালীকে চন্দ্রকোনার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন মণীমালা ও গোবিন্দ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রায় দু’তিন দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় কালীকে। কখনও কখনও মাসে তিন-চারবারও আসতে হয়। এমনটাই চলছে গত চার বছর ধরে।

ঘাটাল হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স- সহ অন্য কর্মীরা কালী বলতে অজ্ঞান। তার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সকলেই তা খেয়াল রাখেন। সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, কালীর জন্য নেবুলাইজার যন্ত্র কিনে দেওয়া হবে। গত বুধবার ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কালীকে। এরপরই নেবুলাইজার যন্ত্র কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুধু যন্ত্র কিনে দিলেই তো হল না। তা ব্যবহার করাও তো জানতে হবে। এ দিন চলল তারই প্রশিক্ষণ। নার্সরা কালীর মাকে শিখিয়ে দিলেন কী ভাবে যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেলেন, “ওই শিশু মূলত শ্বাসকষ্ট ভোগে। তাই এ বার এমন সমস্যা হলে ওকে যাতে হাসপাতালে না আসতে হয় তারজন্য নেবুলাইজার যন্ত্র কিনে দেওয়া হল। শ্বাসকষ্ট হলে যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতি ওর বাবা-মাকে হাতেকলমে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

এ দিন যন্ত্র হাতে নিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না মণিমালা। বললেন, “আমার ছেলের জন্য যাঁরা এতকিছু ভাবছেন ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন।” একই সঙ্গে শিশুটির হাতে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। কখনও চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যু কিম্বা চিকিৎসা না করে হয়রানির অভিযোগ ওঠে ভুরিভুরি। তার মাঝেই এমন উদ্যোগে নজর কাড়ল ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE