Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus

গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে না তো! শুরু সমীক্ষা

প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনা সংক্রমণকে চারটি ধাপে ভাগ করেছে।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০১:০৭
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমণ কি গোষ্ঠী আকার নিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এ বার শুরু হল সমীক্ষা। পোশাকি নাম ‘সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স’। শনিবার থেকেই জেলায় এই সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এরফলে একদিকে যেমন গোষ্ঠী সংক্রমণ হলে তার প্রাদুর্ভাব বোঝা সম্ভব হবে, অন্যদিকে করোনা পরীক্ষার হারও বাড়ানো যাবে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই জেলায় করোনা পরীক্ষার হার বেড়েছে।’’ জেলার তরফে নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মণ্ডল। তিনিও জানান, জেলায় এখন করোনা পরীক্ষার গতি বেড়েছে।

প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনা সংক্রমণকে চারটি ধাপে ভাগ করেছে। এরমধ্যে একটি ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’, যেখানে সংক্রমণের উৎস আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ, সংক্রমণ গোষ্ঠী আকার নেবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত ১৯ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। শুক্রবার পর্যন্ত মেদিনীপুর মেডিক্যালে ৫,০৫৩টি নমুনার পরীক্ষা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘আক্রান্তদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা বহু মানুষের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’’

ওই সূত্রে খবর, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চও (আইসিএমআর) ‘সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স’ নামক এই সমীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ‘হাই-রিক্স’ (বেশি ঝুঁকিপূর্ণ) এবং ‘লো-রিক্স’ (কম ঝুঁকিপূর্ণ) এই দু’টি ক্ষেত্র থেকে নমুনা সংগ্রহ হবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। কম ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছেন প্রসূতি-সহ অন্য রোগীরা। ঠিক হয়েছে, ওই সমীক্ষার জন্য আপাতত প্রতি সপ্তাহে ২০০ জনের লালারস সংগ্রহ করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হবে। এরমধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ উভয় ক্ষেত্রেরই ১০০ জন করে নমুনা নেওয়া হবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের ১০০ জনের মধ্যে থাকবেন ২০ জন চিকিৎসক, ২০ জন নার্স, ২০ জন এএনএম, ৩০ জন আশাকর্মী এবং অনান্য স্বাস্থ্যকর্মী ১০ জন। কম ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন প্রসূতি ও অন্য রোগী ৫০ জন থাকবেন। অন্য রোগীর মধ্যে কোনওভাবেই ‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ বা সারি, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ বা ইলি প্রভৃতি রোগী থাকবেন না। কারণ, এঁদের করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা এমনিতেই থাকে।

জানা গিয়েছে, সমীক্ষার প্রথম পর্যায়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের নমুনা ডেবরা সুপার স্পেশালিটি থেকে ও কম ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের নমুনা খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে এই দুই হাসপাতাল থেকে নেওয়া ২০০টি নমুনা পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হবে। আগামী সপ্তাহে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের নমুনা ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে ও কম ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রের নমুনা শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ হতে পারে।

জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘উপসর্গ থাকা বা না থাকা সমস্ত হাই-রিক্স কন্ট্যাক্টের কোভিড পরীক্ষা করলে গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখা সম্ভব হয়।’’ জেলার অন্য এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘পরীক্ষিতদের কেউ যদি করোনায় সংক্রমিত না হন, তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে জেলায় গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে না।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুও মানছেন, ‘‘আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়রান্টিনে পাঠানো গেলে বাইরে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE