ঠান্ডা পড়ছে। সকালের দিকে বাতাসে হিমেল ভাব জানান দিচ্ছে, শীত এসেই গেল প্রায়। শীতকাল মানেই খাওয়াদাওয়া, রাত জেগে পার্টি। ঠান্ডায় আবার ঘন ঘন চা বা কফি খাওয়ার পরিমাণও বেড়ে যায়। দিনের শেষে ক্লান্তি নিয়ে ফিরে সোফায় বসে এক কাপ গরম কফি খেতেই মন চায়। এ দিকে চিকিৎসকের সতর্কবার্তা, বেশি চা বা কফি কোনওটিই স্বাস্থ্যকর নয়। অতিরিক্ত ক্যাফেইন হজমের বারোটা তো বাজাবেই, ঘুমের সমস্যাও করবে। কাজেই ঠান্ডার সময়ে হালকা খিদে মেটাতে গরম কিছু খেতে মন চাইলে, বানিয়ে ফেলুন স্যুপ। সব সময়েই যে হরেক রকম উপকরণ দিয়ে রসিয়ে রেস্তোরাঁর মতো স্যুপ বানাতে হবে তা নয়। শীতের সব্জি দিয়েই কম সময়ে বানিয়ে নেওয়া যাবে পুষ্টিকর অথচ সুস্বাদু নানা স্যুপ। খেতে পারবে ছোটরাও। বাড়িতে ডায়াবিটিসের রোগী থাকলে, তাঁকেও জলখাবারে দিতে পারবেন।
সহজে ও কম সময়ে তৈরি করা যাবে এমন কিছু স্যুপের রেসিপি
টম্যাটো-তুলসির স্যুপ
৪টি পাকা টম্যাটো নিয়ে ভাল করে ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন। একটি গোটা পেঁয়াজ কুচিয়ে নিন, সঙ্গে ৩-৪ কোয়া রসুন। কড়াইতে এক চামচ অলিভ তেল বা সাদা তেল দিয়ে আগে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি ভেজে নিন। বেশি ভাজবেন না, এতে স্যুপ তেতো হয়ে যাবে। এ বার টম্যাটো গুলি দিয়ে ভাল করে নেড়ে নিন। সামান্য নুন ও মিষ্টি দিয়ে ঢেকে বসিয়ে দিন। টম্যাটো গলে গেলে উপর থেকে গোলমরিচ, তুলসি পাতা ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। স্যুপে ক্রিম দিলে ভাল হয় খেতে। তবে যদি ক্রিম দিতে না চান, সে ক্ষেত্রে কাঠবাদাম ভিজিয়ে বেটে মিশিয়ে দিতে পারেন।
স্যুপ তৈরির নানা রেসিপি শিখে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
পালংয়ের ক্রিমি স্যুপ
২ কাপের মতো পালং পাতা কুচিয়ে নিন। এর সঙ্গে প্রয়োজন হবে ২ চামচের মতো স্প্রিং অনিয়ন কুচি। জল গরম করে তাতে কুচিয়ে রাখা পালং পাতা দিয়ে দিন। সামান্য নুন দিয়ে জল ফুটতে দিন। পালং সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে আধ কাপের মতো দুধ ঢেলে দিন। আঁচ কমিয়ে ফোটান যাতে মিশ্রণটি ঘন হয়ে আসে। এর পর একটি প্যানে অলিভ অয়েল দিয়ে তাতে অরিগ্যানো ও স্প্রিং অনিয়ন দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। তার পর পালং-দুধের মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ফুটে গেলে গ্যাস বন্ধ করে উপর থেকে গোলমরিচ ছড়িয়ে পরিবেশনশীতের
শীতের সব্জি দিয়ে বানানো স্যুপ ছোটরাও খেতে চাইবে। ছবি: ফ্রিপিক।
গাজর-বিন-ধনেপাতার স্যুপ
কড়াইতে সামান্য সাদা তেল দিন। তেল গরম হলে পেঁয়াজকুচি দিয়ে মিনিট পাঁচেক ভাজতে থাকুন। পেঁয়াজ নরম হয়ে গেলে ধনেপাতাকুচি ও ছোট ছোট গাজর ও বিনের টুকরো দিয়ে দিন। ১ মিনিট ভাল করে নাড়ুন। এ বার গরম জল দিন। গাজর, বিন সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। হালকা আঁচেই রান্না হতে দিন। হয়ে এলে একটা হ্যান্ড ব্লেন্ডার দিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। যদি হ্যান্ড ব্লেন্ডার না থাকে, তা হলে গ্যাস থেকে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে মিক্সারে ঘুরিয়ে নিন। তার পর আবার প্যান ঢেলে সামান্য নুন দিন। ধনেপাতা একটু কুচিয়ে নিয়ে উপরে ছড়িয়ে দিন। সামান্য গোলমরিচ ছড়িয়ে দিন। এই স্যুপ প্রোটিনে ভরপুর ও দ্রুত ওজন কমাবে।
আরও পড়ুন:
মাশরুমের স্যুপ
মাশরুম ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ভাল করে ধুয়ে নিন। প্যানে সামান্য মাখন বা অলিভ তেল দিয়ে তাতে একটি গোটা পেঁয়াজের কুচি ও ৩টি রসুনের কোয়া দিয়ে ভেজে নিন। তাতে দিন মাশরুমের টুকরোগুলি। ভাল করে ভাজা হলে আধ কাপ দুধে কর্নফ্লাওয়ার গুলে ঢেলে দিন। ভাল করে ফোটান যত ক্ষণ না ঘন হয়। এ বার উপর থেকে গোলমরিচের গুঁড়ো ও গ্রেট করা চিজ় ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
মিষ্টি কুমড়োর স্যুপ
হাই-প্রোটিন ও খুব কম ক্যালোরি রয়েছে এই স্যুপে। ওজন কমাতে চাইলে এই স্যুপ খেতে পারেন। মিষ্টি কুমড়ো ছোট ছোট করে কেটে নিন। এ বার সামান্য মাখনে কুমড়োর টুকরোগুলি আদা কুচি ও রসুন কুচির সঙ্গে হালকা ভেজে নিন। কুমড়ো নরম হলে ভাল করে পেস্ট করে নিন। এ বার আধ কাপ দুধে অল্প দারচিনি, জায়ফলের গুঁড়ো ও কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে ঢেলে দিন ফুটে গেলে গোলমরিচ ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।