খেয়াল করে দেখুন ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার ঠিক আগের দিনগুলিতে আপনার শরীর ও মন কেমন থাকে! শরীরে অস্বস্তিটা শুরু হয় ঠিক এক সপ্তাহ আগে থেকেই। ঘন ঘন মেজাজ বদল হতে থাকে। কথায় কথায় রাগ হয়। অল্পেই বিরক্ত হয়ে যান আপনজনদের উপরেই। এ তো গেল মানসিক ব্যাপার। শরীরেও কিছু বদল আসে। যেমন, খিদে কম হয়, খাবার দেখলেই গা গোলানো, বমিভাব থাকেই। তা ছাড়া, অহেতুক চিন্তা, মনখারাপ, অবসাদ সবই দেখা দিতে থাকে একে একে।
এমন সব লক্ষণ যদি দেখা দেয়, তা হলে এটা ‘প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম’ (পিএমএস)-এর লক্ষণ। বয়ঃসন্ধিকালে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এখন কমবয়সি মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি। ঋতুবন্ধের ঠিক আগে মধ্যবয়সি মহিলাদেরও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শরীরে কী কী অস্বস্তি হয়?
আরও পড়ুন:
শরীর ভারী হয়ে যাওয়া, তলপেট, পিঠ ও কোমরে ব্যথা।
মাঝেমাঝেই পেশিতে টান ধরা।
বমিভাব, ক্লান্তি, ঝিমুনি।
মাথা যন্ত্রণা, হজমের গোলমাল।
কিছু খেলেই গ্যাস-অম্বল।
মনের উপর কী প্রভাব পড়ে?
অল্পেই বা অকারণে রাগ।
খিটখিটে মেজাজ।
সব সময়ে বিরক্তি।
ঘন ঘন মেজাজ বদলে যাওয়া।
যখন-তখন মনখারাপ, অবসাদ।
কম ঘুম, অতিরিক্ত চিন্তা ও উদ্বেগ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ঋতুস্রাব শুরুর ৫ থেকে ১১ দিন আগে এই সব লক্ষণ দেখা দিতে থাকে অনেকের। এই সময়ে স্ত্রী হরমোন ইস্ট্রোজেন আর প্রোজেস্টেরনের তারতম্যের কারণেই এমন উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। এই দুই হরমোনের ওঠানামায় আরও এক ‘সুখী হরমোন’ সেরোটোনিনের মাত্রা বদলে যায়। তখন শরীর ও মনে এমন সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
আরও পড়ুন:
পিএমএস নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। কমবেশি সব মেয়েরাই এই সমস্যায় ভোগেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, জীবনযাপন বদলালেই এই সমস্যার সুরাহা হতে পারে। তার জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধতে হবে জীবন। নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চার উপরে।
রোজকার ডায়েটে সুষম খাবার, যেমন, ডিম, দুধ, ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার, ফল, সবুজ শাকসব্জি বেশি করে খেতে হবে।
বেশি চিনি আর নুন খাওয়া চলবে না।
বেশি তেল-মশলা দেওয়া খাবার, অতিরিক্ত মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রতিদিন অন্তত আধ ঘণ্টা করে হলেও শরীরচর্চা করতে হবে। হাঁটা, দৌড়নো, স্পট জগিং, যোগাসন দারুণ কার্যকরী হতে পারে।