স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বাদাম খাওয়া জরুরি, এ কথা এখন ছোট থেকে বড় সকলেই জানেন। সমাজমাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং বাদামের গুণাগুণ নিয়ে নিত্যচর্চা। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়ম করে কয়েকটি বাদাম খেলে শুধু শরীর নয়, ভাল থাকে ত্বকও। তা ছাড়া, বাদাম মোটেই ওজন কমানো পথে বাধা নয়, বরং এতে থাকা প্রোটিনেই শরীরের জরুরি শক্তি পাওয়া যায়।
বাদাম উপকারী। তবে যদি ওজন কমানোই লক্ষ্য হয়, তা হলে দৈনন্দিন ডায়েটে বেছে নেবেন কোনটি, চিনেবাদাম না কি কাঠবাদাম?
চিনেবাদাম
প্রোটিনে ভরপুর, বি ভিটামিন, ফোলেটের মতো জরুরি পুষ্টিতে ঠাসা চিনেবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। আমেরিকান কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম বাদামে মেলে ২৩.২ গ্রাম প্রোটিন।যথেষ্ট পরিমাণে স্যাচুরটেডে ফ্যাট থাকে এতে। প্রোটিন থাকায় চিনেবাদাম পেট ভরাতে, শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। বিশেষত পেশি মজবুত করতে প্রোটিন জরুরি।
আরও পড়ুন:
ওজন কমাতে অনেকেই হাই-প্রোটিন ডায়েট বেছে নেন। পেশি গঠনে, বিপাকহার বৃদ্ধিতে, শারীরিক কসরতের জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন। হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে এটি। শুধু ওজন কমাতে নয়, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতেও প্রোটিন দরকার।
কাঠবাদামের গুণ
ভিটামিন-ই, ম্যাগনেশিয়াম এবং নানা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই বাদাম, বিভিন্ন রোগ প্রতিহত করতে সাহায্য করে।১০০ গ্রাম কাঠবাদামে মেলে ২১. ৪ গ্রাম প্রোটিন, ১০.৮ গ্রাম ফাইবার। সকালবেলা খালি পেটে ভেজানো বাদাম খান অনেকে। কাঠবাদাম ভিজিয়ে রাখলে ‘লাইপেস’ নামে একটি উপাদান নির্গত হয়, যা হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতি দিন ৬-৭টি কাঠবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। তবে কাঠবাদাম বা আমন্ড ভিজিয়ে খেতে বলেন কারণ, এই বাদামে ফাইটিক অ্যাসিড নামক একটি উপাদান থাকে। জিঙ্ক এবং আয়রন শোষণ করতে গেলে এই ফাইটিক অ্যাসিড বাধার সৃষ্টি করে। ফলে এই দুই পদার্থের পুরোপুরি ব্যবহার হয় না। বাদাম ভিজিয়ে রাখলে তা থেকে ফাইটিক অ্যাসিড বেরিয়ে যায়। ফলে তার পুষ্টিগুণ বাড়ে।
ওজন কমাতে কোনটি ভাল?
কেউ যদি দৈনন্দিন ডায়েটে প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে চান তা হলে চিনেবাদাম বেছে নিতে পারেন। তবে কাঠবাদামে চিনেবাদামের চেয়ে প্রোটিন একটু কম হলেও, ফাইবার মেলে খানিক বেশি। তাই কেউ প্রোটিন, ফাইবার দুই-ই চাইলে বেছে নিতে পারেন কাঠবাদাম।
চিনেবাদাম, কাঠাবাদামে ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি নানা রকম খনিজও পাওয়া যায়। শরীর সুস্থ রাখতে এক একরকম খনিজের এক একরকম ভূমিকা থাকে।
ওজন কমাতে হলে চিনে বা কাঠবাদাম দুটোই খাওয়া চলে। দু’টি মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। সকালে ভিজিয়ে নয়তো সন্ধ্যায় স্ন্যাক্স হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। এতে যেহেতু ক্যালোরি এবং ফ্যাট যথেষ্ট তাই খেতে হবে পরিমিত। নুন মাখানো বাদাম ভাজা বা গুড় বাদামের স্বাদ ভাল হলেও, এতে ক্যালোরির মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ওজন কমানোর জন্য বাদাম, হয় ভিজিয়ে নয়তো হালকা ঘি রোস্ট করে খাওয়া যেতে পারে। তেল-ঘি ছাড়া বালিতে ভাজা বাদাম খাওয়াও ভাল।
পুষ্টিবিদরা সতর্ক করছেন, শুধু বাদাম খেয়ে ওজন কমে না। বরং মেদ ঝরাতে হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাটের মাত্রা ঠিক রাখা এবং ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি।