প্রতি দিন ১০ হাজার পা হাঁটার উপকারিতা নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু বয়স্কদের জন্যও কি এটা ঠিক? বয়স ষাট পেরিয়েছে যাঁদের, তাঁরাও কি দিনে ১০ হাজার পা হাঁটতে পারবেন? নতুন গবেষণা বলছে, একেবারেই নয়। ষাটোর্ধ্ব মহিলা হোন বা পুরুষ, তাঁরা দিনে কতটা হাঁটলে উপকার পাবেন, তার একটা হিসাব আছে। বহু মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে তা পাওয়া গিয়েছে। সেই হিসাব মতো চললে বয়সকালে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কমবে বলে জাবি। ‘জামা কার্ডিয়োলজি’ জার্নালে সেই সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে নিউ ইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অফ বাফালোর বিজ্ঞানীদের দ্বারা।
ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের দৈনন্দিন হাঁটাহাঁটির মাপকাঠিটা হল ৩,৬০০ পা। ধীরসুস্থে রোজ নির্দিষ্ট সময় ধরে হাঁটলেই হবে। অথবা ঘরের কাজ করতে করতেও তো হাঁটাহাঁটি করা যায়। তা হলেই শরীর সুস্থ থাকবে এবং হার্টও ভাল থাকবে। গবেষকেরা বিগত ৬-৭ বছর ধরে ৬ হাজার মহিলাকে নিয়ে সমীক্ষাটি চালাচ্ছেন। প্রত্যেকের বয়স ষাটের উপরে। গবেষকেরা দেখেছেন, যাঁরা প্রতি দিন ৩,৬০০ পা করে হাঁটেন, তাঁদের শরীর অনেক বেশি সুস্থ। তাঁরা ওই বয়সেও নানা কাজে খুবই সক্রিয়।
আরও পড়ুন:
সমীক্ষার ফল বলছে, যে সব মহিলা সারা দিনে অন্তত ৭০ মিনিটও হাঁটেন বা ঘরের কাজকর্ম করেন, তাঁদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১২ শতাংশ কমে যায়। আবার যাঁরা নিয়ম করে ৩০ মিনিট হাঁটেন বা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের হৃদ্রোগের আশঙ্কা ১৬ শতাংশ কমে যায়। হাঁটাহাঁটির পাশাপাশি সিঁড়ি ভাঙা, বাগান করা অথবা হালকা যোগাসনও হার্ট ভাল রাখে। দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা যাঁরা হাঁটা ও নানা রকম শরীরচর্চার জন্য ব্যয় করেন, তাঁদের হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ১৭-১৮ শতাংশ কমে যায়।
হাঁটারও নিয়ম রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, সকালে উঠে হাঁটাহাঁটি করলেই সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কেউ আবার মনে করেন, এক বারেই সারা দিনের প্রয়োজনীয় তিন হাজার পা হেঁটে ফেলবেন। এতে শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে শরীর এবং মন দুই-ই বেঁকে বসে। তাই সকালে উঠে একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটলেই কাজ হবে, এমন নয়। বরং সারা দিনের কাজের মাঝে যদি হাঁটাহাঁটি বা কায়িক কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে নেওয়া যায়, তা হলেও লক্ষ্য পূরণ হতে পারে। সমীক্ষা বলছে, যে সব মহিলারা দিনে ৬-৭ ঘণ্টা সময় শুধু বসে বা শুয়ে কাটান, তাঁদের হার্টের সমস্যা বেশি হয়। মোট কথা, বসে না থেকে সচল থাকাতেই অনেক উপকার পাওয়া যায়।