প্রতীকী ছবি।
পাকিস্তানের মাটিতে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীকে সন্ত্রাস চালাতে দেওয়া হবে না। আজ দক্ষিণ পাকিস্তানের একটি সমাবেশে এমনটাই দাবি করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যদিও নয়াদিল্লির দাবি, এখনও পাকিস্তানে রয়েছে ২২টি জঙ্গি ঘাঁটি। এর মধ্যে ন’টিই জইশ-ই-মহম্মদের। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এই দাবি করেছেন ভারতীয় আধিকারিকেরা। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি, সীমান্তে সন্ত্রাস চললে বালাকোটের মতো ফের অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। তবে আগামীকালই ইসলামাবাদে ফের কাজে যোগ দিচ্ছেন হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া।
ইমরানের বক্তব্যে অবশ্য সন্তুষ্ট নয় আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দফতরের উপ-মুখপাত্র রবার্ট পালাডিনো বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট করে জোরদার পদক্ষেপ করুক ওরা। সন্ত্রাস রুখতে ইসলামাবাদের উপর চাপ দিয়ে যাওয়া হবে।’’
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে বালাকোট এলাকায় বোমা ফেলে ভারতীয় বায়ুসেনা। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়, বালাকোটে মাসুদ আজহারের ঘাঁটি-সহ বেশ কিছু জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে হতাহত হয়েছে। নিহত জঙ্গির সংখ্যা নিয়ে অবশ্য ধন্দ থেকে যায়। স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি কখনওই। ইমরান খান দেশকে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হতে দেবেন না বললেও বালাকোটের সেই জইশ ঘাঁটিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল পাক প্রশাসন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের এই নিয়ে তিন বার আটকাল জঙ্গিরা। ফলে জঙ্গি ঘাঁটিতে ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বালাকোটে জঙ্গল ধ্বংস! ভারতীয় পাইলটদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাক বন দফতরের
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘গোটা বিশ্বের সন্ত্রাসের উৎসস্থল পাকিস্তান। জঙ্গি-সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ পাকিস্তান বরাবরই সন্ত্রাসের কথা অস্বীকার করে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে বলেও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গেই ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘২২টি জঙ্গি শিবির এখনও রয়েছে। পাকিস্তান কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’ তিনি জানিয়েছেন, বালাকোটে সন্ত্রাস দমন অভিযান ছিল। পরের দিনই, ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ২০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে ভারতীয় সেনার উপরে হামলা চালায়। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যুদ্ধের আবহ তৈরি করছে পাকিস্তান। করাচিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হচ্ছে। আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে চেনা ছকে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা।’’ তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘ভারত যা করেছে, সেটা স্বাভাবিক। ওরা সন্ত্রাস চালালে দিল্লি জবাব দেবেই। পড়শি রাষ্ট্রকে তার দাম দিতেই হবে।’’ মুম্বই-হামলার অন্যতম চক্রী তথা জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদের সঙ্গে কথা বলতে পাকিস্তানের কাছে ভিসা চেয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বক্তব্য, হাফিজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। গৃহবন্দি হাফিজকে শুক্রবারের নমাজ পড়তে মসজিদেও যেতে দেওয়া হয়নি। যদিও ভারতীয় আধিকারিকদের দাবি, ‘‘জঙ্গিদের গৃহবন্দি করে রাখা মানে তো বিলাসবহুল থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া। পরিস্থিতি শান্ত হলেই ছেড়ে দেবে পাকিস্তান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy