Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
India China

চিনা চ্যানেলে দেখানো ছবি নস্যাৎ করছে চিনের দাবিকেই

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় সেনার এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ছবিগুলির (চিনা টেলিভিশনে দেখানো) সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে।’’

চিনের সরকারি টিভি চ্যানেলে দেখানো এই ধরনের ছবি দেখিয়ে যে দাবি করা হয়েছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ছবি সূত্র: সিসিটিভি-৪

চিনের সরকারি টিভি চ্যানেলে দেখানো এই ধরনের ছবি দেখিয়ে যে দাবি করা হয়েছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ছবি সূত্র: সিসিটিভি-৪

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ১৮:০৪
Share: Save:

গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাতে সোমবারই রাজি হয়েছে বেজিং। আর সেই দিনই রাতে চিনের সরকারি টিভি চ্যানেলে এমন ছবি দেখানো হল, যা কার্যত ব্যুমেরাং হল শি চিনফিং সরকারের। জোরদার হল ভারতের দাবি। চিনা বাহিনী যে ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টের কাছে ভারতীয় ভূখণ্ডে ভারতীয় সেনার কাজকর্মে বাধা দিয়েছিল, তাও কার্যত স্পষ্ট হল।

সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রীর দীর্ঘ ভিডিয়ো কনফারেন্সের পর গালওয়ান উপত্যকায় সেনা মোতায়েন নিয়ে জট কাটে। তার পর থেকেই সেনা সরাতে শুরু করেছে বেজিং। সোমবার সন্ধ্যায় চিনের সরকারি টিভি চ্যানেল সিসিটিভি-৪-এর একটি অনুষ্ঠানে কিছু স্যাটেলাইট ইমেজ দেখানো হয়।ওই টিভি চ্যানেলের দাবি, ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টের কাছে ভারতীয় সেনার একটি হেলিপ্যাড এবং অন্যান্য সেনার সামগ্রী সরিয়ে দিচ্ছে চিনের বাহিনী। ভারতীয় সেনার তাঁবু এবং হেলিপ্যাডের ছবি দেখানো হলেও সেখানে চিনা সেনার কার্যকলাপের ছবি নেই। ফলে এটাও চিনের কোনও পরিকল্পনার অংশ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

চিন দাবি করে আসছে, তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি। কিন্তু সরকারি ভাবে না হলেও ভারতীয় সেনা এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চিনা বাহিনী ভারতীয় ভূখণ্ডের ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টে ঢুকে বসেছিল। তার জেরেই ১৫ জুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চিনের সরকারি চ্যানেলের দাবিমতো, চিনা বাহিনী যদি ভারতীয় তাঁবু ও হেলিপ্যাড তুলে দিয়ে থাকে, তা হলে সেই এটা স্পষ্ট হয় যে বেজিং আগ্রাসন চালিয়েছে এবং ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা চালিয়েছে।

১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার এই ছবি দেখানো হয়েছে চিনের টিভি চ্যানেলে। ছবি সূত্র: সিসিটিভি-৪

আরও পড়ুন: চিনের সেনা সরানো ৬২ সালের পুনরাবৃত্তি নয়তো! সতর্ক বাহিনী

আবার একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের দাবি, গত ২২ মে-র স্যাটেলাইট ইমেজে এই কাঠামো বা সেনার কার্যকলাপ ধরা পড়েনি। ইগলুর মতো একটি ছোট্ট তাঁবু ছাড়া ওই সময়ের ছবিতে ভারত বা চিন কোনও পক্ষের সেনার কোনও ছাউনিও ওই ছবিতে দেখা যায়নি। আবার ১৫ জুন গালওয়ানের ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টের কাছে দু’পক্ষের সেনা সংঘর্ষের পরের স্যাটেলাইট ইমেজে চিনের সেনার উপস্থিতি ও কাঠামো তৈরির প্রমাণ মিলেছে। ওই সংবাদ মাধ্যমের দাবি, এর থেকেই স্পষ্ট, চিন সেনা ভারতীয় সেনার কাজকর্মে বাধা দিয়েছিল এবং পিছু হঠতে বাধ্য করেছিল। ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে ঢুকেছিল চিনা বাহিনী। গালওয়ানের সেনা সংঘর্ষ তারই পরিণাম।

সোমবারের ওই ছবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ভারতীয় সেনারও। সেনার নিয়ম অনুযায়ী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ছবিগুলির (চিনা টেলিভিশনে দেখানো) সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে।’’

২২ মে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনা জওয়ানদের কার্যক্রম। ছবি-সূত্র: চিনের টিভি চ্যানেল

আরও পড়ুন: আগাম সতর্কতা, চিনকে টক্কর দিতে লাদাখে মোতায়েন বায়ুসেনার অ্যাপাচে

পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এই গালওয়ান নদী উপত্যকা কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপত্যকার এই পেট্রোলিং পয়েন্টগুলি থেকে নজরদারি চালানো যায় প্রতিপক্ষ সেনার কার্যকলাপের উপর। ভারতের যুক্তি, এই গালওয়ান নদী উপত্যকার ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্ট পর্যন্ত এলাকা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE