Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
India

কাশ্মীর প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদে কোণঠাসা চিন, ভারতের পাশে ফ্রান্স

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর চিন বিষয়টির ঘোর নিন্দা করে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি ভারত-বিরোধী প্রস্তাব আনতে চেষ্টা করে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৩৮
Share: Save:

প্রথম বার অগস্টে। দ্বিতীয় বার চলতি মাসে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে চিনের ভারত-বিরোধী সক্রিয়তাকে আটকাতে নেতৃত্ব দিয়েছে ফ্রান্স। কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর চিন বিষয়টির ঘোর নিন্দা করে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি ভারত-বিরোধী প্রস্তাব আনতে চেষ্টা করে। বেজিংয়ের চাপে দু’বার বৈঠকও করেন পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য-সহ মোট ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা। কিন্তু দু’বারই বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে চিনকে হতাশ করে। সদস্য দেশগুলির বক্তব্য, বিষয়টি ভারত- পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়, তৃতীয় পক্ষের মাথা গলানোর প্রয়োজন নেই। আর নিরাপত্তা পরিষদ এ নিয়ে আলোচনা করার যথাযথ মঞ্চও নয়। ভারতের হয়ে এবং চিন-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওই বৈঠকে আগাগোড়া সওয়াল করেছে পি-৫-এর অন্যতম দেশ ফ্রান্স। রাশিয়া, আমেরিকা এবং ব্রিটেন (চিন ও ফ্রান্স ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের অন্য তিন স্থায়ী সদস্য) ছাড়াও অন্যান্য অস্থায়ী রাষ্ট্রকে একজোট করে তারা চিনের আনা প্রস্তাবকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।

১৯৯৮ সালের ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ভারত যে ৩৫টি দেশের সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করে, তার মধ্যে প্রথম দেশটিই ছিল ফ্রান্স। এখনও পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক আস্থা সবচেয়ে ধারাবাহিক ভাবে রয়ে গিয়েছে এই দেশটির সঙ্গেই। বারবার যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। চিনকে আটকে দেওয়ার ফরাসি পদক্ষেপ মৈত্রীর সেই সম্পর্ককে ফের সামনে নিয়ে এল। এই মুহূর্তে চাপে থাকা মোদী সরকারের বিদেশনীতির ক্ষেত্রে যা আশার সৃষ্টি করেছে।

সূত্রের বক্তব্য, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে মিষ্টতা কমেছে। আমেরিকার সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা যেমন মস্কোকে কিছুটা দূরে ঠেলেছে, তেমনই তালিবানকে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় রাশিয়াকে ঝুঁকতে হয়েছে ইসলামাবাদের দিকে। আবার আমেরিকার সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গত দেড় দশকে অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু কাবুলের কারণে ওয়াশিংটনের খুঁটি বাঁধা রয়েছে ইসলামাবাদের কাছে। আপাতত না হলেও ভবিষ্যতে ‘ভাল জঙ্গি, খারাপ জঙ্গি’-র তত্ত্ব ফের ভারতের সামনে খাড়া করতে পারে আমেরিকা— এমন আশঙ্কা থেকেই গিয়েছে সাউথ ব্লকে।

ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ভারত এবং ফ্রান্স— দু’টি দেশই প্রায় একই সময়ে একমেরু থেকে বহুপাক্ষিক বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। ভূ-রাজনীতির ভরকেন্দ্র ইউরো আটলান্টিক থেকে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সরে আসছে, এটা টের পেয়ে ফ্রান্স ভারতকে অংশীদার হিসাবে বেছে নিয়েছে—মনে করেছে কূটনৈতিক সূত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India France
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE