Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফ্রান্সে কি মোদীর সঙ্গে বৈঠক ট্রাম্পের

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক হতে পারে মোদীর।

নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

কাশ্মীর নিয়ে উত্তাল ভারত-পাক কূটনৈতিক যুদ্ধ। আর তারই মধ্যে সোমবার ফ্রান্সে জি-৭ রাষ্ট্রগুলির ‘আউটরিচ সেশন’-এ আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক হতে পারে মোদীর। কাল দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। কালকের আলোচনায় পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে মোদী কড়া সমালোচনা করার পরই ট্রাম্প ইমরানের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সংযত হতে অনুরোধ করেছেন।

আজ এই টানটান চিত্রনাট্যের পারদ আরও চড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী ফোন করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। কার আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ফোন করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পারকে। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজনাথ মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি পাকিস্তানি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিষয়টি যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সেই ব্যাখ্যাও মার্কিন কর্তাকে দিয়েছেন রাজনাথ। অন্য দিকে, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক এই মরিয়া দৌত্যকে মেপে নিয়ে পাল্টা রাস্তা নিচ্ছে ইসলামাবাদ। আজ সে দেশের বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ভারতীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তারা আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে যাবেন।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, চিনকে পাশে নিয়ে পাকিস্তান যাতে কাশ্মীরের আন্তর্জাতিকীকরণ করতে না পারে সে জন্য ইউরোপের পাশাপাশি আমেরিকার সঙ্গেও সর্বাত্মক দৌত্য করতে সচেষ্ট সাউথ ব্লক। কিছু দিন আগেও ওভাল অফিসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈঠক করার পরে আফগানিস্তান প্রশ্নে পাল্লা ভারী ছিল ইসলামাবাদের দিকেই। সেই পাক-নির্ভরতা আমেরিকার কমেছে এমনটাও নয়। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরের থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর যে ভাবে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে নেমেছে ইমরান সরকার তা যে সুনজরে দেখছে না হোয়াইট হাউস, সে কথাও কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার ধারণা, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের অতিসক্রিয়তা এবং জঙ্গিপনা বাড়ানোর মতো ঘটনায় আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া আবার গভীর জলে চলে যাবে। কাবুল সরকারও এই নিয়ে সরব হয়ে গতকাল জানিয়েছে যে কাশ্মীরের কথা তুলে তাদের চাপে ফেলার চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ।

সব মিলিয়ে এখন পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও ভারসাম্যের নীতি নিয়েও চলবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমনটাই মনে করা হচ্ছে। বেশ কিছু দিন ধরেই ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বৈঠক করানোর জন্য কূটনৈতিক ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল সাউথ ব্লক। ইমরানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক এবং পাকিস্তানকে বন্ধ করে দেওয়া সামরিক সাহায্য আবার চালু করার পরে এই তৎপরতা আরও বাড়ে। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, শুধুমাত্র কাশ্মীর পাকিস্তান বা কৌশলগত ক্ষেত্রই নয়, বাণিজ্য ক্ষেত্রেও দ্বিপাক্ষিক কিছু জট কাটানো মোদী সরকারের কাছে এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইরান থেকে তেল আমদানি, রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র আমদানি সংক্রান্ত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলিও দিল্লির কাছে আশু সঙ্কটের কারণ।

দুই নেতার সম্ভাব্য বৈঠকটি তাই বহুমাত্রিক ভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ, জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Donald Trump France
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE