ভোটগণনা যত এগোচ্ছিল, পাক প্রধানমন্ত্রীর কুর্সির পথ ততই যেন মসৃন হচ্ছিল ইমরান খানের সামনে। কিন্তু আচমকাই কার্যত নীরবতা। থমকে রয়েছে গণনার ফলাফল। এমনকী, ইমরান নিজে বা তাঁর দলের তরফেও কোনও বার্তা নেই। পাকিস্তানের চ্যানেল জিও টিভির শেষ আপডেট অনুযায়ী, পিটিআই ১১৮, পিএমএল-এন ৬০ এবং পিপিপি ৩৫। পাশাপাশি সব পরিসংখ্যানেই এটা নিশ্চিত, ভোটের ময়দানেও সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন ‘কাপ্তান’ ইমরান। শেষ পর্যন্ত ১৩৭-এর ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে না পারলেও বিলাবল জারদারির পিপিপি-র সঙ্গে জোটের রাস্তাও প্রায় পাকা। ফলে পাক প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন পাক রাজনীতিকদের বড় অংশ।
এই পরিসংখ্যান বৃহস্পতিবার ভোরের। তারপর থেকে আর কোনও টিভি চ্যানেল বা সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে আর কোনও আপডেট নেই। এই পরিসংখ্যান দেওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ ধরেই আর কোনও আপডেট নেই। একই জায়গায় রয়েছে। আবার পাকিস্তানের সরকারি টিভি চ্যানেলে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত আসনের ফলাফল জানানো হয়েছে। তাতে জয়-পরাজয় নির্ধারিত ২৬টি আসনের মধ্যে পিটিআই-এর ঝুলিতে ১৮টি আসন। পিএমএল-এন ৪টি, পিপিপি ২টি, মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল একটি আসন পেয়েছে। একটি আসন জিতেছেন নির্দল প্রার্থী।
কিন্তু এগুলি অধিকাংশই বৃহস্পতিবার ভোরে দেওয়া হয়েছে। তারপর আর এই সংখ্যায় পরিবর্তন প্রায় কিছুই হয়নি। পাক সংবাদমাধ্যমগুলিও দাবি করছে, অস্বাভাবিক দেরি হচ্ছে ভোট গণনায়। ফলে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ কখন হবে, সে বিষয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। এমনকী, পাক নির্বাচন কমিশন থেকেও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: স্ক্যান্ডালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিরোধীদের বোল্ড করলেন ইমরান
বুধবার ভোট গণনার ফল ধীরে ধীরে সামনে আসা শুরু হতেই পিটিআইয়ের তরফে টুইট করে পাকিস্তানবাসীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি বলা হয়, ‘‘ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৈরি তো পাকিস্তান।’’ কিন্তু তারপর আর উল্লেখযোগ্য টুইট নেই।
ইসলামাবাদের একটি সংবাদপত্রের স্টল। ছবি: এএফপি
পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে মোট আসন ৩৪২। কিন্তু তার মধ্যে ভোট হয় ২৭২টি আসনে। বাকি ৭০টি আসন মহিলা ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। ভোটে যে দল যে সংখ্যক আসনে জয় পায়, সেই অনুপাতে এই সংরক্ষিত আসনগুলিতে প্রতিনিধি ঠিক করে দলগুলি। যদিও এই সংরক্ষিত আসনগুলির উপর সরকার গঠন নির্ভর করে না। সেই হিসেব হয় সংরক্ষিত বাদ দিয়ে ২৭২টি আসনের মধ্যে। সেই অর্থে ১৩৭টি আসন জিতলেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়ে সরকার গঠন করতে পারবে ইমরানের দল। সেই ম্যাজিক ফিগার থেকে এখনও কিছুটা দূরেই থেমে রয়েছে পিটিআই-এর আসন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় বসতে অন্য দলের দিকে তাকাতেই হচ্ছে ইমরানকে, এটা কীসের ইঙ্গিত?
তবে চূ়ড়ান্ত ফলাফল যাই হোক, প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক এবং প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের মধ্যে যে দূরত্ব সামান্যই তা একপ্রকার নিশ্চিত। পিপিপ-র সঙ্গে জোটের বিষয়ে ইতিমধ্যেই দু’তরফে প্রাথমিক কথাবার্তাও শুরু হয়েছে বলে পাক সংবাদমাধ্যমগুলি সূত্রে খবর। সব মিলিয়ে পাক নির্বাচনের ম্যান অব দ্য ম্যাচ ইমরান খানই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy