ব্রিটেনের প্রধনামন্ত্রী থেরেসা মে। -ফাইল ছবি।
একটি ‘বিচ্ছেদ’ই আপাতত ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে এনেছে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র। তাঁর উপর আস্থায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে তাঁর দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা, এমপি-দের মধ্যেই।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে এসে নিজের দলে এতটাই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন মে যে, প্রধানমন্ত্রীর উপর কতটা আস্থা রয়েছে, তা বুঝতে বুধবার ভোটাভুটিতে সামিল হলেন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি-রা। ওই ভোটাভুটির ফলাফলই জানিয়ে দেবে, ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার সরকারি সিদ্ধান্তে শাসকদলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি-র সায় আছে কি না।
মঙ্গলবারই, ব্রেক্সিট বিলটি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোট দেওয়ার কথা ছিল ব্রিটিশ এমপিদের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে টেরেসা ঘোষণা করেন, আপাতত ভোট স্থগিত রাখছেন তিনি। সেই ঘোষণা করামাত্র রে রে করে ওঠেন বিরোধীরা। এমনকি, প্রবল সমালোচনা করেন টেরেসার দলেরও একটা বড় অংশ। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টির উপর, ঘটনাক্রমের উপর, পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মে।’’ এই ঘোষণার পরে গত কুড়ি মাসে গত গতকাল সব থেকে নীচে নেমে গিয়েছিলে ব্রিটিশ পাউন্ডের দর (ডলারের সাপেক্ষে)।
ব্রেক্সিট বিলের যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধীদের, এমনকি দলেরও একটা বড় অংশের তোপের মুখে পড়েছেন মে, সেটি হল নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সংক্রান্ত সীমান্ত নীতি। স্বতন্ত্র দেশ আয়ারল্যান্ড ইইউ-এর অন্তর্গত। আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অংশ। বহু বছর ধরে এই সীমান্তে গণ্ডগোল লেগেই থাকত। ২০০৮ সালের ‘গুড ফ্রাইডে চুক্তি’র পরে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টায়। এখন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ডের নাগরিকদের সীমান্ত পার হওয়ায় কোনও বাধা নেই। লাগে না বাড়তি কোনও কাগজপত্রও। এখানেই মুশকিলে পড়েছেন মে। কারণ ইইউ থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে এলে তাদের সঙ্গে লন্ডনের নতুন সীমান্ত নীতি তৈরি করতে হবে। তখন ‘গুড ফ্রাইডে চুক্তি’ ভেঙে ফেলতে হতে পারে, এই আশঙ্কাই প্রকাশ করছেন টেরেসা-বিরোধী এমপিরা।
কনজারভেটিভ পার্টির তথাকথিত ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডি জানিয়েছেন, দলের সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টে দলের এমপি-দের ১৫ শতাংশ চাইলে এই ভোটাভুটির আয়োজন করতে হয়। কিন্তু তার চেয়েও বেশি এমপি এ বার ওই ভোটাভুটি চেয়েছেন। বুধবার রাতেই হাউস অফ কমন্সে সেই ভোটাভুটির ফলাফল ঘোষণা হবে।
আরও পড়ুন- ব্রেক্সিট নিয়ে প্রবল চাপে মে
আরও পড়ুন- পর্ন স্টারের করা মামলায় জয় পেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার খেসারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রিটেনকে ইতিমধ্যেই দিতে হয়েছে যথেষ্ট। তার জেরে ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে এই দাবি জোরদার হয়ে উঠেছে যে, ফের ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে গণভোট নেওয়া হোক। এ দিন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি-দের ভোটাভুটির ফলাফলই জানিয়ে দেবে, কোন পথে হাঁটতে চাইছে ব্রিটেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy