সাইনাসের ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্বাশ ছাড়াই বাজারচলতি মাথা যন্ত্রণার ওষুধ আর নয়। ছবি: শাটারস্টক।
প্রথমেই একটা ভুল ধারণা ভেঙে দেওয়া যাক। সাইনাস কোনও রোগই নয়, সাইনাস আমাদের মাথায় অবস্থিত একটি প্রকোষ্ঠ, যার কাজ ভেন্টিলেশনকে ঠিক রাখা। সেই ভেন্টিলেশনের কাজে বিঘ্ন ঘটলে যে সমস্যা হয় তাকেই আমরা চলতি ভাষায় বলি ‘সাইনাস’। ডাক্তারি পরিভাষায় ‘সাইনোসাইটিস’।
এই প্রকোষ্ঠগুলির ঝিল্লিপর্দায় বায়ু চলাচল স্বাভাবিক না থাকলে অথবা মিউকাস জমলে প্রবল প্রদাহ হয়। ফলে সাইনাস অঞ্চলে ব্যথা হয় খুব। অনেকের নাকের হাড় বাঁকা থাকলে এই সমস্যা হয়। আবার অ্যালার্জির কারণেও সাইনোসাইটিস হয়। এক্স-রে করলে সাইনাসের অঞ্চলটি ঘোলাটে দেখালেই চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন সমস্যা। এই ধরনের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই কাম্য। তবে ঘরোয়া কিছু উপায়ে সাইনাসের সমস্যাকে বশ মানানো সম্ভব।
এই সমস্যা যখন তখন হানা দিতে পারে। কিন্তু সব সময় হাতের কাছে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। আবার সব পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার উপায়ও থাকে না। তাই সাময়িক আরাম পেতে ঘরোয়া উপায়েই ভরসা রাখতে হয় অনেক সময়। দেখে নিন সে সব পদ্ধতি।
আরও পড়ুন: সিগারেটে আসক্তি? ক্যানসার বা হার্টের অসুখ ছাড়াও রয়েছে এ সব ভয়
সাইনাসের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রধান হাতিয়ার গরম তরল খাবার। এতে নাসারন্ধ্রে জমে থাকা মিউকাস অনেক তরল হয়ে যায়। এতে দূর হয় কপালে চাপ ধরে থাকা ব্যথাও। নাক দিয়ে জল টানার থেকে চেয়ে ভাল টোটকা সাইনাসের ক্ষেত্রে আর কিছু নেই। তবে এটা একদিনে অভ্যাস করা মুশকিল। সামান্য উষ্ণ গরম জল হাতে নিয়ে এক নাক দিয়ে টেনে, অন্য নাক দিয়ে বার করে দিতে হয়। এই পদ্ধতিতে শ্বাসনালী পুরো পরিষ্কার হয়ে যায়। খুব তাড়াতাড়ি সাইনাসের রোগী আরাম পান। এক চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার, হাফ চামচ হলুদ, সামান্য আদা কুচি, পাতিলেবু, সামান্য গোলমরিচ, তিন চার কোয়া রসুন জলে ফেলে দিন। জল ফুটে গেলে সেই মিশ্রণ আসতে আসতে চুমুক দিয়ে খান। এতে মধুও দিতে পারেন। সাইনাসের সঙ্গে লড়তে এই দাওয়াই বেশ কাজের। ভেপার নিন। ধোঁয়া ওঠা ফুটন্ত গরম জলে এক-দু’ফোঁটা এসেনশিয়াল ইউক্যালিপটাস অয়েল ফেলে সেই জল ইনহেল করুন। এই সময়ে মাথা একটা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে নিলে পুরো বাষ্পটাই গিয়ে ধাক্কা মারবে জমে থাকা মিউকাসে। ফলে উপকার পাবেন তাড়াতাড়ি।
আরও পড়ুন: মারণ এইচআইভির লক্ষণগুলি জানেন? সতর্ক হোন প্রথম থেকে
খাদ্যতালিকায় বেশি করে রাখুন পিঁয়াজ-আদা-রসুন।
ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক দুই ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল আঙুলে নিয়ে নাকের গোড়ায় লাগিয়ে নিন। ঘুমের সময়টুকু আরাম পাবেন। ঘুমনোর সময় এসি চালানোর অভ্যেস থাকলে তা ত্যাগ করুন। প্রয়োজনে ঘুমের ঘণ্টা খানেক বা ঘণ্টা দেড়েক আগে এসি চালিয়ে নিয়ে ঘর ঠাণ্ডা করে তারপর ফ্যান চালিয়ে শুতে যান। সারাদিন প্রচুর পরিমাণ জল খান। এতে অ্যাসিডিটি এড়ানো যাবে। অ্যাসিডিটি যত কমবে ততই কমবে মিউকাস। ক্রনিক সাইনাস থাকলে দুগ্ধজাতীয় খাবার, ময়দা, ভাজাভুজি এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারে পিঁয়াজ, রসুন, আদার ব্যবহার বাড়ান। সাইনাসের দারুণ ঘরোয়া দাওয়াই এই সব্জিগুলো। মাথা যন্ত্রণা হলে গরম জলে নরম সুতির কাপড় ভিজিয়ে বার বার মাথায় দিন। কিছুটা আরাম পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy