Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
diet

এ ডায়েটে ঘি-মাখন, মাছ-মাংস-ডিম ঠাসা কিন্তু ওজন কমবে হুড়মুড়িয়ে!

এক দিন-দু’দিন নয়, রোজ৷ এবং খাওয়ার পরও দেখবেন দিব্য কমছে ওজন!

এই ডায়েটে ভরসা করলে সহজেই কমবে ওজন। ছবি: শাটারস্টক।

এই ডায়েটে ভরসা করলে সহজেই কমবে ওজন। ছবি: শাটারস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:৩৬
Share: Save:

সকালে খেলেন ডিম আর বেকন। দুপুরে স্মোকড স্যামন। রাতে মাখনে মাখামাখি চিকেন বা মাটন স্টেক বা চিজে ভরপুর বেকড ফিশ। এক দিন-দু’দিন নয়, রোজ৷ এবং খাওয়ার পরও দেখলেন দিব্য কমছে ওজন!

ব্যাপারটাকে রূপকথা বলে মনে হবে না কি?

কিন্তু না, রূপকথা নয়৷ লো–কার্বোহাইড্রেট ও হাই প্রোটিন ডায়েট, তথা অ্যাটকিন্স ডায়েট খেলে এ রকমই হয়৷ সে কন্টিনেন্টাল না খেয়ে ভারতীয় খাবার খেলেও হয়৷ কারণ, এই ডায়েটের প্রবক্তারা জানিয়েছেন, ওজন বাড়ার প্রায় সব চাবিকাঠিই লুকিয়ে আছে কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে৷ তাকে কমিয়ে ফেলতে পারলেই অর্ধেক কাজ সারা হয়ে যায়৷

অনেকে অবশ্য প্রোটিনের সঙ্গে থাকা চিজ, মাখন এগুলো এড়িয়ে চলেন। বরং বাদাম, অল্প অলিভ অয়েল সামান্য তেলে সতে করা প্রোটিন এ সব থেকে পেতে চান দরকারি ফ্যাট। সে সবও এই অ্যাটকিন্স ডায়াটেরি নানা রূপ। মোট কথা, নো কার্বস, লো ফ্যাট আর বরপুর প্রোটিনের এই ডায়াটেই লুকিয়ে ওজন কমার মন্ত্র।

আরও পড়ুন: প্রতি দিন নানা টেনশনে জেরবার? এই সব উপায়ে উদ্বেগ কমান সহজে

খাওয়াদাওয়া নিয়ে এ সব তথ্য আগে জানতেন?

অলিভ অয়েল বা হালকা তেলে সতে করা প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখুন এই ডায়েটে

লো–কার্ব ও হাই প্রোটিনের কামাল

কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমালে ওজন কমে দু’ভাবে৷ প্রথমত, কম কার্বোহাইড্রেট মানে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়া৷ শরীরের অভ্যন্তরীন কাজ চালানোর জন্য গ্লুকোজই যেহেতু জ্বালানি হিসাবে কাজ করে, এর অভাব হলে হাত পড়ে চর্বির ভাঁড়ারে৷ চর্বি গলে শক্তির জোগান দেয়৷ ফলে খুব বেশি ব্যায়াম না করেও ওজন কমতে শুরু করে৷ এই পদ্ধতির নাম কিটোসিস৷ এর কিছু খারাপ দিক থাকলেও ওজন ও চর্বি কমাতে এর ভূমিকা আছে৷ দ্বিতীয়ত, কার্বোহাইড্রেটের বদলে বেশি প্রোটিন খেলে পেট বেশি ক্ষণ ভরা থাকে বলে ভুলভাল খাওয়ার তাগিদ অনেক কমে যায়৷ তার উপর প্রোটিন পরিপাকে খরচ হয় বেশি ক্যালোরি৷ সবে মিলে ওজন কমে৷

ডায়েট শুরুর আগে

শুরুতে ভাত–রুটি–পাস্তা–নুডুলস জাতীয় স্টার্চি খাবার খাওয়া একটু করে কমান, বাড়ান শাক–সব্জি–ফল ও প্রোটিনের পরিমাণ৷ শরীর প্রস্তুত হওয়ার পর শুরু করুন ডায়েট৷ তার আগে ডাক্তার দেখিয়ে নেবেন৷ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাই কোলেস্টেরল, কিডনির অসুখ থাকলে বা বয়স বেশি হলে তো বিশেষ করে পরামর্শ নিন ডায়েটেশিয়ানের। বুঝেশুনে কাজে নামুন৷ হঠাৎ করে খাবারে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন৷ তাই প্রথমে একটু একটু করে শুরু করুন। এই ডায়েট শুরু করলে ঘন ঘন রেস্টুরেন্টে খাওয়া বন্ধ করতে হবে৷ বা খেলেও ঘরে যে ধরনের খাবার খাচ্ছেন মোটামুটি সেই নিয়ম মেনে চলতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় বাড়িতে বানানো মাছ-ডিম-মাংসের পদের উপর নির্ভর করেি ওজনে হ্রাস টানুন।

আরও পড়ুন: বিরক্তিকর সহকর্মী? জব্দ করুন এই সব কৌশলে

চিকেন স্টেক বা বেকড চিকেনও অনাসাসা রাখতে পারেন এই ডায়েটে।

কী খাবেন ও কী খাবেন না

অ্যাটকিন্স-২০ ডায়েট প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ে মাছ, মাংস, চিকেন, মুসুর ডাল— অর্থাৎ প্রোটিন খাওয়া যায় ইচ্ছা মতো৷ তবে মাংস থেকে চর্বি কেটে বাদ দিতে হয়৷ প্রোটিন হিসেবে বেশি করে দুধ, দই, ছানা, চিজ, ইয়োগার্ট, সয়াবিন, বাদাম ও বীজ খাবেন৷ (থাইরয়েড থাকলে এড়িয়ে চলুন সয়াবিন ও বাদাম) ঘি–মাখনের বদলে উপকারি ফ্যাট, যেমন অলিভ বা ক্যানোলা অয়েল, মাছের তেল ইত্যাদি খেলে ভাল হয়৷ ২০ গ্রামের মতো কার্বোহাইড্রেট হিসাবে অল্প শাক–সব্জি খেতে হয়৷ ভাত–রুটি–পাস্তা–নুডুলস বাদ চলে যায়৷ ময়দার খাবার, চিপ‌্স, কুকিজ, ক্যান্ডি, কেক, পেস্ট্রি, মিষ্টি বন্ধ থাকে৷ এই পর্যায়ে ওজন দ্রুত কমে৷

বেশ কিছুটা ওজন কমার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে বিন, ডাল, বাদাম, ফল ও লাল চালের ভাত, ব্রাউন ব্রেড, আটা নুডুল ইত্যাদি এমন ভাবে দেওয়া হয় যাতে ওজন যে ভাবে কমছে সে ভাবেই কমে৷ টার্গেট ওজনের চেয়ে ১০ পাউন্ড দূরে থাকা পর্যন্ত চলে এই পর্যায়৷

তৃতীয় পর্যায়ে খাবারে ও জীবনযাপনে একটু-আধটু পরিবর্তন আনা যায়৷ পছন্দের খাবার একটু বেশি খেয়ে ব্যায়াম করে ক্যালোরি ঝড়ানোর ব্যবস্থা করা হয় অনেক সময়৷ এই পর্যায় চলে জীবনভর৷ মাঝেমধ্যে অবশ্য একটু এ দিক ও দিক করা যায়৷

অ্যাটকিন্স ৪০

অ্যাটকিন্স ২০–তে নিয়মের কড়াকড়ি বেশি বলে অনেকে মেনে চলতে পারেন না৷ তাঁদের জন্য আছে অ্যাটকিন্স-৪০৷ এতে শুরু থেকেই ৪০ গ্রামের মতো কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ অল্প করে ব্রাউন ব্রেড, ব্রাউন রাইস, বিনস, ডাল, বাদাম, শাক–সব্জি–ফল খাওয়া যায়৷ অনেকে এই অ্যাটকিন্স ২০ ও অ্যাটকিন্স ৪০ মিলিয়ে মিশিয়েও ডায়েট প্ল্যান করেন।

লাভ–ক্ষতি

ওজন কমাতে সিদ্ধহস্ত৷ তবে এত বেশি আমিষ প্রোটিন খেলে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা আছে কি না, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনও নিঃসন্দেহ নন৷ সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে অবশ্য জানা গিয়েছে যে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, প্রাণীজ প্রোটিন ও অল্প ও ফ্যাট খেয়ে ওজন কমানো অন্য উপায়ে ওজন কমানোর চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর৷ কারণ তাতে হার্টের জন্য উপযোগী অলিভ অয়েল, ডাল ও সয়াবিন বেশি থাকে৷

(শুরু হয়েছে আমাদের নতুন বিভাগ 'HELLO DOCTOR'। এ বারের বিষয় ‘ব্রণর সমস্যা’। এ বিষয়ে আপনার প্রশ্ন পাঠান query@abpdigital.in এই মেল আইডি তে। উত্তর দেবেন ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fitness Tips Health Tips Diet Plan Atkins Die
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE