Advertisement
E-Paper

সুস্থ থাকার সবুজ সাথী

মাছ-মাংস বাদ। তবু শরীরের যাবতীয় পুষ্টি মেটাতে নিরামিষ খাবার কি যথেষ্ট? ডায়েটেশিয়ান অর্পিতা দেবের মতে, যে কোনও বয়সের ব্যক্তির ডায়েট ৮০ শতাংশ অ্যালক্যালাইন আর ২০ শতাংশ অ্যাসিডিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবেই শরীরের পিএইচ ফ্যাক্টরের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, ভেজ ডায়েট অ্যালক্যালাইন ডায়েট

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫১

এ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী প্রত্যহ মাছ-মাংস বর্জিত নিরামিষ খাবার খান। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার আমৃত্যু আমিষ খাবার ছুঁয়েও দেখেন না। বার্ধক্যের দিকে এগোলে বাঙালি সমাজের একাংশকেও নিরামিষ ডায়েটের দিকে ঝুঁকতে দেখা যায়। তার পিছনে ধর্মীয়, সামাজিক বা ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে। এখন প্রশ্ন হল, প্রাণিজ প্রোটিন বাদ পড়ায় পুষ্টিগুণে কি ঘাটতি হচ্ছে? দীর্ঘ দিন ধরে প্রাণিজ প্রোটিন না খেলে শরীরে কি সমস্যা তৈরি হয়?

ডায়েটেশিয়ান অর্পিতা দেবের মতে, যে কোনও বয়সের ব্যক্তির ডায়েট ৮০ শতাংশ অ্যালক্যালাইন আর ২০ শতাংশ অ্যাসিডিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবেই শরীরের পিএইচ ফ্যাক্টরের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, ভেজ ডায়েট অ্যালক্যালাইন ডায়েট। আর ননভেজ খাবার মানে অ্যাসিডিক ডায়েট। অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি মাংসাশী হলেও তাঁর প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের সিংহভাগ আসার কথা অ্যালক্যালাইন ডায়েট থেকেই।

বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক গঠন, কার্যক্ষমতা, ক্যালরির চাহিদা, কাজের ধরন—প্রতিটি বিষয় যাচাই করে কোনও ব্যক্তির ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। ডায়েটেশিয়ানের কথায়, কেউ যদি নিরামিষাশী হন, শরীরের চাহিদা অনুযায়ী কোন কোন খাবার কতটা পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে, তার স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই। দীর্ঘ দিন সেই চাহিদা পূর্ণ না হলে শরীরে সমস্যা তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।

• প্রোটিন: নিরামিষাশী ব্যক্তিদের প্রথম চিন্তার কারণ, প্রাণিজ প্রোটিনের অভাব। মনে রাখতে হবে, প্রাণিজ প্রোটিন প্রথম শ্রেণির প্রোটিন। যার মধ্যে ডিম সর্বোৎকৃষ্ট। ডিমের প্রোটিনের সাপেক্ষেই বাকি খাবারের প্রোটিনের গুণগত মান বিচার করা হয়। তা হলে নিরামিষাশী ব্যক্তি কী ভাবে এই চাহিদা পূরণ করবেন?

ভাতের সঙ্গে ডাল, রুটির সঙ্গে ডাল, মুড়ির সঙ্গে‌ ছোলামাখা, ছাতুর পরোটা, খিচুড়ি, রুটির সঙ্গে সয়াবিনের তরকারি—এই ডায়েটের বিশেষত্ব। সিরিয়াল জাতীয় খাবারের সঙ্গে এই জাতীয় প্রোটিন মিশিয়ে খেলে সিরিয়ালের লিমিটিং অ্যামিনো অ্যাসিড (সিরিয়ালে যা থাকে, তা ডালে থাকে না। আবার ডালে যা থাকে, তা সিরিয়ালে থাকে না) আর ডালের লিমিটিং অ্যামিনো অ্যাসিড একে অপরের পরিপূরক হয়ে যায়। ফলে ওই ব্যক্তির প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পূর্ণ হয়ে যায়।

• ভিটামিন সি: লেবু জাতীয় ফল, আমলকী, সবুজ শাকপাতা ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে থাকলে ভিটামিন সি এবং প্রয়োজনীয় মিনারেলও পাওয়া যায়। প্রতিটি ঋতুর নিজস্ব তরকারিও ডায়েটে থাকা জরুরি।

• দুধ: নিরামিষ খাবার যাঁরা খান, তাঁদের খাবারে রোজ এক লিটার পর্যন্ত দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার থাকা বাঞ্ছনীয়। এতে শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন, অ্যালবুমিনের পরিমাণ ঠিকমতো থাকে। ত্বকজনিত সমস্যার উপশমেও দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যের বিকল্প নেই।

• দুধে অ্যালার্জি: দুধ সহ্য না হলে, দই বা শুকনো ছানা খেতে পারেন।

• ফ্যাট: শরীরে এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডেরও প্রয়োজন আছে। ভেজ ডায়েট বলে ঘি-মাখন বেশি খেতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। দিনে এক চামচ ঘি বা মাখন খেতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে রান্নার তেল একটু কম ব্যবহার করতে হবে।

বাঙালিদের মধ্যে অনেকেরই পঞ্চাশের পর মাছ-মাংসের প্রতি অনীহা তৈরি হতে দেখা যায়। তখন অনেকেই সপ্তাহে দু’দিন করে নিরামিষ খেতে শুরু করেন। কে‌উ বা দিনে মাছ-মাংস খান। রাতে নিয়ম করে ভেজ। তবে নিরামিষ খেলেই বেশি সুস্থ থাকা যায়, এমন ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেই ডায়েটেশিয়ানদের মত।

তাই সুস্থ থাকার জন্য পরামর্শ, সুষম খাবার খান। খাবারের গুণ ও পরিমাণের উপর নজর রাখুন।

Food Diet Tips Healthy Living
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy