সপ্তাহান্তে দু’দিন পরপর ছুটি। কিন্তু ছুটির দিন যে একটু ভাল-মন্দ খাবেন, তার উপায় নেই। কারণ, ছুটির মেজাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। হাঁসফাঁস আবহাওয়ায় তেল-মশলাদার খাবার খাওয়া তো দূর, দেখলেও ভয় লাগছে অম্বল-বুকজ্বালায় ভোগা বাঙালির। কিন্তু তা বলে কি ছুটির দিনেও ডাল-ভাতই খাবেন?
একেবারেই না। অসুস্থ না হয়েও মুখরোচক খাবার খাওয়া যায়। যা বানানো সহজ, আবার পেটের জন্যও হবে হালকা। তেমনই এক খাবার গন্ধরাজ ঘোল পোলাও। যা নামমাত্র তেল-মশলায় তৈরি। আর পাতে পড়লে তার সুঘ্রাণে কাঠফাটা গরমেও তরতাজা বোধ হবে।
এই পোলাওকে সঙ্গ দিতে পাশ-পাতে রাখতে পারেন হালকা মুরগির ঝোল। গরমের দুপুরে বাড়িতে অতিথি সমাগম হলেও এই খাবার পরিবেশন করা যাবে। আবার বেশি তেল-মশলা হজম করতে না পারা মানুষটিও ভয় না পেয়ে এ খাবার খেতে পারবেন। শিখে নিন, কী ভাবে বানাবেন।
গন্ধরাজ ঘোল পোলাও
উপকরণ: ২ কাপ গোবিন্দভোগ চাল
১ কাপ দই
১টি বড় গন্ধরাজ লেবু
৪-৫টি গন্ধরাজ লেবুর পাতা
১৫-২০ দানা গোলমরিচ
এক মুঠো কাজু
এক মুঠো কিশমিশ আধ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখা
৩-৪টি কাঁচালঙ্কা চেরা
৫ টেবিল চামচ ঘি
স্বাদমতো নুন
সামান্য চিনি
আরও পড়ুন:
প্রণালী: চাল জলে ভাল ভাবে ধুয়ে রাখুন। এ বার এক কাপ জলে এক কাপ দই মিশিয়ে তাতে তাতে দুই টেবিল চামচ গন্ধরাজ লেবুর রস মিশিয়ে ভাল ভাবে ফেটিয়ে নিন। ঠিক যে ভাবে গন্ধরাজের ঘোল বানানো হয়, সেই ভাবে। দেখবেন, কোথাও কিছু দলা পাকিয়ে যেন না থাকে।
এ বার একটি কড়াই বা যে কোনও মোটা তল বিশিষ্ট ধাতব পাত্র আঁচে বসিয়ে ঘি গরম করুন। তার মধ্যে দিয়ে দিন গোলমরিচ, সামান্য নাড়াচাড়া করে দিন কাজু। কাজু ভাল ভাবে ঘিয়ে ভেজে বাদামি রং ধরলে দিন ভেজানো কিশমিশ। কয়েক সেকেন্ড নাড়াচাড়ার পরে কিশমিশ ফুলে উঠলে সব একটি বাটিতে তুলে রাখুন। বাকি থাকা ঘিয়ে দিয়ে দিন ধুয়ে রাখা চাল।
চাল ঘিয়ের সঙ্গে ভাল ভাবে মাখিয়ে নিতে হবে। মাঝারি আঁচে হালকা হাতে ৩-৫ মিনিট পর্যন্ত নাড়াচাড়া করতে হবে। যাতে চালের দানা ভেঙে না যায়। চাল সামান্য স্বচ্ছ হয়ে এলে ওর মধ্যে ঢেলে দিতে হবে দইয়ের ঘোল।
আরও পড়ুন:
২ কাপ দইয়ের ঘোলের সঙ্গে মেশাতে হবে আরও ২ কাপ উষ্ণ জল। যেহেতু চালের পরিমাণ ২ কাপ। তাই জলের ভাগ হতে হবে চালের দ্বিগুণ। এটাই ভাত রান্নার ‘গোল্ডেন রুল’।
এর পরে স্বাদমতো নুন, চিনি, ভেজে রাখা কাজু-কিশমিশ-গোলমরিচ, কয়েকটা চেরা কাঁচা লঙ্কাও দিয়ে দিন ওর মধ্যে। শেষে দিন লেবুপাতা এবং ঢাকা দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না হতে দিন অন্তত ২০ মিনিট। তার পরে ঢাকা খুলে দেখুন জল শুকিয়েছে কি না। না শুকোলে ঢাকা খুলে আরও কিছু ক্ষণ রান্না হতে দিন।
ভাত পুরোপুরি জল টেনে নিলে বুঝবেন রান্না হয়ে গিয়েছে। আঁচ বন্ধ করে পোলাওয়ের উপরে লেবুর খোসা কোরানো (শুধু সবুজ অংশটুকু। সাদা অংশ পড়লে তেতো হয়ে যাবে) আর অল্প ঘি ছড়িয়ে মুখ ঢাকা দিয়ে রেখে দিন আরও মিনিট পনেরো। তার পরে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ছবি: রুমকিজ় গোল্ডেন স্পুন।
মুরগির ঝোল
গন্ধরাজ পোলাওয়ের সঙ্গে বাড়ির সাধারণ মুরগির ঝোলও ভাল লাগবে। সব বাঙালি পরিবারেরই নিজস্ব মুরগির ঝোলের রেসিপি আছে। মূল প্রণালী অল্পবিস্তর এক হলেও মায়ের হাতে বা গৃহকর্ত্রীর হাতে কিংবা পরিস্থিতি বিশেষে রন্ধনপটু গৃহকর্তার হাতের গুণে সেই রান্না আলাদা মাত্রা পায়। গন্ধরাজ পোলাওয়ের সঙ্গে বানিয়ে নিন আপনার পরিবারের সেই আলু দেওয়া মুরগির ঝোল। ব্যস, তা হলেই ছুটির দিনের ভোজ তৈরি।