Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Deepak Chahar

ছেলের জন্য চাকরি ছেড়েছেন, ডিগ্রি না থেকেও কোচিং করিয়েছেন দীপকের বাবা

ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী লোকেন্দ্র সিংহের হাত ধরেই পেসার হয়ে ওঠার হাতেখড়ি দীপকের। নতুন বল হাতে দিয়ে তিনিই ক্রমাগত অনুশীলন করাতেন ছেলেকে। বল পুরনো হয়ে গেলে ফেরত নিতেন।

এ ভাবেই ছেলেকে আগামী দিনে দেখতে চান গর্বিত বাবা। ছবি: বিসিসিআই।

এ ভাবেই ছেলেকে আগামী দিনে দেখতে চান গর্বিত বাবা। ছবি: বিসিসিআই।

সংবাদ সংস্থা
আগরা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:৪০
Share: Save:

স্বপ্ন সফল। হ্যাঁ, ছেলে দীপকের হ্যাটট্রিকের পর এটাই মনে হচ্ছে বাবা লোকেন্দ্র সিংহ চাহারের। রবিবার রাতে নাগপুরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে দীপক চাহারের ছয় উইকেটই ফারাক গড়ে দিয়েছে। আর সেই কারণেই উচ্ছ্বসিত বাবা।

ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী লোকেন্দ্র সিংহের হাত ধরেই পেসার হয়ে ওঠার হাতেখড়ি দীপকের। নতুন বল হাতে দিয়ে তিনিই ক্রমাগত অনুশীলন করাতেন ছেলেকে। বল পুরনো হয়ে গেলে ফেরত নিতেন। ফের হাতে তুলে দিতেন নতুন বল। যাতে সুইং করানোর ক্ষমতা আয়ত্তে আসেন, সেটাই লক্ষ্য ছিল বাবার। আর দীপক ক্রিকেটমহলকে বুঝিয়েও দিয়েছেন যে, তিনি দুই দিকে সুইং করাতে পারেন।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সাত রানে ছয় উইকেট ডানহাতি পেসারকে প্রতিষ্ঠা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। উত্তর প্রদেশের আগরার বাড়িতে বসে বাবা লোকেন্দ্রর গলায় তাই আবেগ, “এখন মনে হচ্ছে আমরা দু’জনেই যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তা পূর্ণ হয়েছে। আর এই পারফরম্যান্সের আগে নেটে ও অন্তত এক লক্ষ ডেলিভারি করেছে।”

আরও পড়ুন: গ্রেগ চ্যাপেলের প্রত্যাখ্যান বাড়িয়ে দিয়েছিল জেদ, দু’বছর পর দুর্দান্ত রঞ্জি অভিষেক চাহারের

চোটের জন্য বাধা পড়েছিল দীপকের কেরিয়ার। কয়েক বছর পিছিয়েও পড়েছেন তিনি। বাবা তা মেনে নিয়ে বলেছেন, “কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে ও চোট পেয়েছিল। যে সময়ে চোট পায়, সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বায়ুসেনার চাকরির জন্য সিনিয়র চাহার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন রাজস্থানের গঙ্গানগরে। ছেলের ক্রিকেটে জোর দেওয়ার জন্য এক সময় চাকরি ছেড়ে দেন লোকেন্দ্র সিংহ। তিনি বলেছেন, “যখন এয়ারফোর্সের চাকরি ছেড়ে দিই, তখন জানতাম ঠিক কী করতে চলেছি। কখনই এটাকে আত্মত্যাগ বলে মনে করিনি। ১২ বছর বয়সে ছেলেকে খেলতে দেখেই মনে হয়েছিল ওর মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। সহজাত দক্ষতা ছিল ওর। আমি নিজেও ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাবা অনুমতি দেননি। তাই ছেলের মাধ্যমে নিজের স্বপ্নটাই পূর্ণ করতে চেয়েছিলাম। চাইছিলাম দীপক যেন নিজেও এই স্বপ্ন দেখে। আমার কোনও প্রথাগত কোচিং ডিগ্রি নেই। কিন্তু দীপককে গাইড করার জন্য যেটুকু দরকার, তা শিখে নিয়েছিলাম।”

কিন্তু প্রথাগত ডিগ্রি ছাড়া কী ভাবে তিনি কোচিং করাতেন ছেলেকে? বাবার উত্তর, “ম্যালকম মার্শাল আমার সব সময়ের ফেভারিট। ডেল স্টেইনকেও ভাল লাগে। এই দু’জনের ভিডিয়ো দেখতাম। আউটসুইংয়ের সময় ওদের কব্জির অবস্থান লক্ষ করতাম। শুনতাম ধারাভাষ্যকারদের মন্তব্য। তার পর এই সমস্তই শেখাতাম দীপককে।”এ বার টেস্টে ছেলেকে দেখতে চাইছেন লোকেন্দ্র সিংহ। তাঁর কথায়, “চিরাচরিত ফরম্যাটে ও খেলতে পারলে দারুণ হয়।” আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরও ছয়-সাত বছর দীপক খেলবেন বলে বিশ্বাস করছেন তিনি। আর তা হলে টেস্টের সাদা জামায় ছেলেকে দেখার স্বপ্নও পূর্ণ হবে, আশাবাদী তিনি।

আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিক তো বটেই, নাগপুরে এই রেকর্ডগুলিও করলেন চাহার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE