Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Football

করোনার জের, ইস্টবেঙ্গলের টনি স্পেনে ফিরে বসছেন ওষুধের দোকানে

করোনার প্রভাব শুধুমাত্র যে বিশ্বের অর্থনীতিকে ধাক্কা দেবে তা নয়, ফুটবল মাঠেও পড়তে চলেছে এর প্রভাব। আর সত্যি যদি তাই হয়, তা হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবলারদের ক্লাব পেতে সমস্যা হবে।

করোনার জেরে ওষুধের দোকানে কাজ করছেন টনি। —নিজস্ব চিত্র।

করোনার জেরে ওষুধের দোকানে কাজ করছেন টনি। —নিজস্ব চিত্র।

কৃশানু মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ১৭:০৭
Share: Save:

করোনার জেরে ফুটবল মাঠ ছেড়ে তিনি এখন ফার্মেসির দোকানে বসছেন। ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ওষুধ। এক স্পেনীয় সাংবাদিক তাঁকে চিনে ফেলায় সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। সেই সাক্ষাৎকার দেখানো হয়েছে স্পেনের বিভিন্ন টেলিভিশনেও। তাঁকে নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে সে দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।

এ হেন টনি ডোভালে আশঙ্কা করছেন, করোনার প্রভাব শুধুমাত্র যে বিশ্বের অর্থনীতিকে ধাক্কা দেবে তা নয়, ফুটবল মাঠেও পড়তে চলেছে এর প্রভাব। আর সত্যি যদি তাই হয়, তা হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবলারদের ক্লাব পেতে সমস্যা হবে।

এশিয়ার বেশ কয়েকটি ক্লাবের অফার ছিল লাল-হলুদের প্রাক্তনের কাছেও। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সব ক্লাবগুলো ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকাকে জানিয়ে দিয়েছে যে, এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ইউরোপের ফুটবলারদের এখনই সই করানোর পরিকল্পনা নেই। ফলে আগামীদিনে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ফুটবলারদেরও। দেশের সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশের ক্লাবে সই করার ক্ষেত্রে সমস্যা হতেও পারে।

আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খেলোয়াড়রা হয়ে পড়েছেন গৃহবন্দি। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সে দিকেই তাকিয়ে সবাই। করোনার থাবায় আক্রান্ত স্পেন। টনি বলছিলেন, ‘‘স্পেনের পরিস্থিতি ভাল নয়। এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে আমাদের একযোগে। স্পেনে বাধ্যতামূলক কোয়রান্টিনে রয়েছেন মানুষজন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও কিন্তু ইউরোপের ফুটবলারদের ক্লাব পেতে সমস্যাই হবে।’’

বাড়িতে অনুশীলন করে নিজেকে ফিট রাখছেন টনি।

কারণ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ১০ নম্বর জার্সিধারী বলছিলেন, ‘‘তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশিরভাগ দেশ। ফুটবলাররা ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। এক দেশ থেকে আর এক দেশে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা জানা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এশিয়া বা অন্য মহাদেশের ক্লাব পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে ইউরোপের প্লেয়ারদের। ইউরোপে মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই মারণ রোগ। আমার কাছেই তো অফার ছিল এশিয়ার বিভিন্ন ক্লাবের। কিন্তু ওরা বিদেশি ফুটবলার সই করানোর পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করে দিয়েছে।’’

এই মুহূর্তে কলকাতায় থাকা বিদেশি ফুটবলারদেরও একই অবস্থা। টনির দেশের হোসেবা বেইতিয়া-ফ্রান গনজালেজরাও গৃহবন্দি। অনুশীলন বন্ধ। মোহনবাগান আই লিগ জিতে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। দ্বিতীয় স্থানের জন্য লড়াই বাকি। তবে করোনার আতঙ্কে আই লিগ স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। কবে আই লিগের বল গড়াবে সবুজ গালচেতে তা নিয়েই রয়েছে সন্দেহ।

আরও পড়ুন: ধোনিকে বল না করাই ভাল, বলছেন কিউয়ি তারকা পেসার

আপাতত ফুটবলাররা ঘরে নিজেদের ফিট রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। টনিও নিজেকে ফিট রাখার জন্য ঘরেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর ঘর এখন জিম হয়ে গিয়েছে। ফিট থাকার জন্য ভারী ফোল্ডিং খাট, বেশ কয়েকটা জলের বোতলকে একসঙ্গে করে ওয়েট ট্রেনিং করছেন। টনি বলছিলেন, ‘‘এখন কোনও খেলা নেই। নিজেকে ফিট রাখা ছাড়াও মাকে সাহায্য করছি। করুনিয়ায় আমার মায়ের ওযুধের দোকান রয়েছে। আমিও এখন ওষুধের দোকানে বসছি।’’

ফার্মেসিতেও ডিগ্রি রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলারের। তাই মায়ের ওষুধের দোকানে বসছেন এখন। কলকাতার খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। এই শহরের করোনা পরিস্থিতি জানতে পেরে সবার উদ্দেশে টনির বার্তা, ‘‘সাবধানে থাকতে হবে সবাইকে। সরকারের তরফ থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা যেন সবাই মেনে চলেন। আপাতত ঘরেই থাকুন সবাই।’’

স্পেনে ফিরে গেলেও তাঁর মনে প্রাণে কলকাতা। ফিরতে চান ইস্টবেঙ্গলে। পড়তে চান পছন্দের লাল-হলুদ জার্সি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE