স্বপন দাশগুপ্ত-পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
করোনা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রচার ছিলই। এ বার ‘আমপান’-কে সামনে রেখে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত নির্বাচনী যুদ্ধে নেমে পড়ল বিজেপি। এবং এ ক্ষেত্রেও তাদের বড় হাতিয়ার সামাজিক মাধ্যম।
ঘূর্ণিঝড়ের পরে বিজেপি এখন বলছে, সেনার সাহায্য ছাড়া কলকাতার পরিস্থিতি আরও শোচনীয় থাকত। রাজ্যে ‘অযোগ্য’ সরকারকে বদলে দিয়ে ২০২১ সালে বিকল্প সরকার প্রতিষ্ঠার ডাক দিচ্ছে তারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে কাল, বুধবার থেকে সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট নিয়েও নেমে পড়তে চলেছে বিজেপি।
কেন্দ্রীয় শাসক দলের এমন পরিকল্পনাকে তীব্র পাল্টা আক্রমণে বিঁধছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘পরপর দুর্যোগের সময়ে রাজনীতিতে এমন নিকৃষ্ট প্রচার কখনও দেখিনি! যখন মানুষকে বাঁচাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবন বাজি রেখে লড়ছেন, সেই সময়ে বিজেপির নেতারা কুর্সি দখলের ভাবনায় ব্যস্ত!’’
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সামাল দিতে ‘ব্যর্থতা’র প্রশ্ন তুলে পরবর্তী বিধানসভা ভোটের প্রচারের ডাক সোমবার দিয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ ও বিজেপির ‘বিশিষ্ট মুখ’ স্বপন দাশগুপ্ত। টুইট-বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘রাস্তা পরিষ্কার করতে সেনা যদি অসামান্য কাজ না করত, তা হলে কলকাতার বেশির ভাগ এলাকা এখনও যে অন্ধকারেই থাকত, এটা এখন পরিষ্কার। তৃণমূল সরকারের অযোগ্যতা নাগরিকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন সময় একটা বিকল্প সরকারের জন্য তৈরি হওয়ার। যে সরকার কাজ করবে, লুট নয়! তৈরি হোন ২০২১-এর জন্য।’’
এমন প্রচারের সুর অবশ্য খানিকটা বাঁধা হয়ে গিয়েছিল রবিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মন্তব্যে। টুইট করে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘অল্প সময়ের মধ্যেই সেনাবাহিনী দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে এবং পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করছে। তিন দিন অপেক্ষা না করে মুখ্যমন্ত্রী আগে যোগাযোগ করলে আরও আগে এই কাজ হতে পারত।’’ এই বক্তব্য এবং করোনা মোকাবিলায় ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগ নিয়েই ভোটের প্রচারের নকশা তৈরি সাজাচ্ছে বিজেপি।
পার্থবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘করোনা প্রতিরোধে অন্য অনেক রাজ্যের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে পাঁচ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে জীবনহানি যথাসম্ভব এড়ানো গিয়েছে। এগুলোকে ব্যর্থতা বলে? দেশ, রাজ্য এবং মানুষের প্রতি কোনও অনুভূতি, দায়বদ্ধতা কিছুই বিজেপি নেতাদের নেই!’’
বিজেপি সূত্রের খবর, তৃণমূলের সরকারের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে কাল তাদের বিরুদ্ধে ৯ দফা চার্জশিট পেশ করবে গেরুয়া শিবির। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন এবং সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের সঙ্গে দলের রাজ্য নেতৃত্বের এ দিন ভিডিয়ো-বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। চার্জশিট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলা, নারী নিরাপত্তা প্রভৃতি নানা বিষয়ে রাজ্য সরকারের ‘ব্যর্থতা’ তুলে ধরা হবে ওই চার্জশিটে। তবে দুর্যোগের পরে রাজ্যে পুনর্গঠনের কাজ চলছে বলে কালই রাস্তায় না নেমে আপাতত সামাজিক মাধ্যমেই জোর দিতে চান বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।
তৃণমূলের পার্থবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘মানুষ সবই দেখছেন। তাঁরাই জবাব দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy