জল থেকে তোলা হচ্ছে বাসটি।— নিজস্ব চিত্র।
গোটা বাসটিকে তোলা সম্ভব হয়নি। ক্রেনের তার থেকে এখনও সেটি ঝুলছে। কিন্তু, আর উপরে তোলার ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। অন্ধকার নেমে এলে উদ্ধারের কাজ করা সম্ভব নয়। তাই, ওই অবস্থাতেই উদ্ধারকারী দল বাসের ভিতর থেকে বার করে এনেছেন একের পর এক দেহ।
সোমবার সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৭০ ফুট গভীর বিলে পড়ে যায় যাত্রিবোঝাই একটি বাস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন বাসটিতে। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁদেরই এক জন মারা যান। উদ্ধার করা হয় আরও তিন জনের দেহ। এ দিন সন্ধ্যায় ক্রেন দিয়ে তুলে আনার চেষ্টা করা হয় বাসটিকে। ঝুলন্ত সেই বাস থেকেই উদ্ধার হয় আরও ৩২ জনের দেহ।
দুপুরেই উদ্ধারস্থলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র-সহ প্রশাসনের প্রচুর আধিকারিক।
• সন্ধ্যা ৬.৪৫: এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে ৩৬ জনের দেহ উদ্ধার। সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান।
• সন্ধ্যা ৬.৩০: ফের ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী।
• সন্ধ্যা ৬.২৫: এখনও পর্যন্ত উদ্ধার ২৫টি দেহ।
• বিকেল ৫.২০: বার করে আনা হচ্ছে একের পর এক দেহ।
• বিকেল ৫.১৩: বাস থেকে বের করা হল প্রথম দেহ।
• বিকেল ৫.০০: জলের অনেকটাই উপরে তোলা সম্ভব হয়েছে বাসটিকে। ভিতরে একাধিক মৃতদেহ।
• বিকেল ৪.১০: জল উপরে বাসের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে।
• বিকেল ৩.৪৫: দেখা মিলল বাসটির।
• দ্রুত সেতুর ভাঙা অংশ সংস্কারের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
• বাসের কিছুটা অংশ উঠতেই ক্রেনের চেন ছিঁড়ে গেল।
• চারটি ক্রেনের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে বাসটি।
• বিকেল ৩.১৫: দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী।
• হেলিকপ্টারে করে বহরমপুর পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে বাসটি করিমপুর থেকে মালদহ যাচ্ছিল।
সকাল ৭টা ১০ নাগাদ, দৌলতাবাদের বালিরঘাট ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে রেলিং ভেঙে সোনার রত্নাকর বিলে পড়ে সম্পূর্ণ ডুবে যায় বাসটি। নদীর পলিতে আটকে যায় বাসের একটা অংশ।
দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।— নিজস্ব চিত্র।
এ দিন দুর্ঘটনার পর পরই স্থানীয় লোকজন জল থেকে ১০ জনকে উদ্ধার করেন। তার মধ্যে ৭ জন পুরুষ এবং ৩ জন মহিলা। উদ্ধারের পর এক বৃদ্ধা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
দুর্ঘটনার পর কিছু ক্ষণ কেটে গেলেও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। আগুন নেভাতে দমকল এলে ইট-পাটকেল ছুড়ে তাদের কাজে বাধা দেয় জনতা। এর পর পুলিশ শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়।
আরও পড়ুন: বেঁচে আছি! এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না
চলছে উদ্ধার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: ঝাপসা কাচে লেখা ‘ইমার্জেন্সি এক্সিট’, ও পারে নিথর শাখা-পলা
ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। যাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জলের গভীরতা বেশি থাকার জন্য প্রথম দিকে উদ্ধার কাজে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।’’ পাশাপাশি মৃতদের পরিবারপিছু ৫ লাখ, গুরুতর আহতদের ১ লাখ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উদ্ধার হওয়া তিন যাত্রী। (বাঁ দিক থেকে) বাবর আলি শাহ, রিপন মণ্ডল, মৌমিতা মণ্ডল।
পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। একটি লরিকে ওভারটেক করতে গিয়ে জলে পড়ে যায় বাসটি।’’ উদ্ধার কাজ শুরু হতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘নদীতে জল বেশি থাকায় প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজে সমস্যা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy