Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Scholarship Portal

ভর্তি-নথি যাচাই ছাড়াই কেন চালু বৃত্তির পোর্টাল?

মেধাবৃত্তিগুলির জন্য অনেক পড়ুয়া আবেদন করেন প্রতি বছরই। ভর্তি হওয়া ৭০% থেকে ৮০% পড়ুয়া কোনও না কোনও বৃত্তির জন্য আবেদন করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০৮
Share: Save:

অতিমারির জন্য এ বছর কলেজে ভর্তি হচ্ছে দেরিতে। স্বভাবতই ক্লাস শুরু হতে অনেকটা দেরি হবে। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ, তফসিলি জাতি ও জনজাতির পড়ুয়াদের মেধাবৃত্তির জন্য আবেদন করতে ইতিমধ্যেই পোর্টাল চালু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। অথচ কলেজে ভর্তির নথি যাচাই এবং তাদের অনুমোদন ছাড়া পড়ুয়ারা এই আবেদন করতে পারেন না। ক্লাস শুরু না-হলে সেই যাচাইয়ের কাজ হবে না এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার ডিসেম্বরের আগে ক্লাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। প্রশ্ন উঠছে, ভর্তির নথি পরীক্ষার আগেই বৃত্তির পোর্টাল চালু করা হল কেন? শিক্ষা শিবিরের অনেকের মতে, এত শীঘ্র পোর্টাল চালু করার সুফল পড়ুয়ারা পাবেন না।

উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পরে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হলে তাঁদের নথি ও শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে এবং বৃত্তির আবেদন খতিয়ে দেখে কলেজকেও একই পোর্টালে প্রত্যেক আবেদনকারীর তথ্য আপলোড করতে হয়। কিন্তু এ বছর ভর্তি ও ক্লাস শুরু করতে দেরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি বলেছিল, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ১ নভেম্বর শুরু হোক। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে নভেম্বর উৎসবের মাস। তাই ওই মাসের পরে, ডিসেম্বরের প্রথম দিকে এ রাজ্যে ক্লাস শুরু হতে পারে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশ, ভর্তি-প্রক্রিয়া চলবে পুরোপুরি অনলাইনে। তার পরে ছাত্রছাত্রীরা কলেজে ক্লাস করতে গেলে তাঁদের নথি যাচাই করা হবে। তার আগে নয়। ভর্তি-প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। আর নথিপত্র পরীক্ষার আগে কোনও কলেজই কাউকে তাদের ছাত্র বা ছাত্রী বলতে পারে না।

মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মন্টুরাম সামন্তের প্রশ্ন ‘‘ভর্তির পরে ছাত্রছাত্রীদের নথি যাচাইয়ের কাজই তো এখনও বাকি। অনেকেই একাধিক কলেজে ভর্তি হয়ে থাকতে পারেন। নথি পরীক্ষা ছাড়া সেটা জানার উপায় নেই। নথি যাচাই ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন স্কলারশিপের আবেদনপত্র পরীক্ষা করা হবে কিসের ভিত্তিতে?’’

জবাব মিলছে না। অথচ বেশ কয়েকটি কলেজ সূত্রের খবর, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার কলেজকে বলা হচ্ছে, বিভিন্ন বৃত্তির আবেদনের কাজ শুরু করে দেওয়া হোক। মেধাবৃত্তিগুলির জন্য অনেক পড়ুয়া আবেদন করেন প্রতি বছরই। ভর্তি হওয়া ৭০% থেকে ৮০% পড়ুয়া কোনও না কোনও বৃত্তির জন্য আবেদন করেন। নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী শুক্রবার জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে ভর্তি হয়েছেন, এমন অনেক ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। ‘‘তাঁরা এখন আদৌ আবেদন করতে পারবেন কি না, সরকারি নির্দেশ আসার আগে পর্যন্ত আমরা সেটা বুঝতে পারছি না,’’ বলেন অধ্যক্ষ।

শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, এত আগে আবেদনের পোর্টাল খুলে দিলে কোনও সুফলই মিলবে না। কারণ, ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া হিসেবে তখনই গণ্য হবেন, যখন সংশ্লিষ্ট কলেজে তাঁদের ভর্তির নথি যাচাই পর্ব সম্পূর্ণ হবে। এই পরিস্থিতিতে দু’টি উপায় আছে। প্রথমত, বৃত্তির আবেদন-পর্ব পিছিয়ে দেওয়া। সরকার যখন থেকে ক্লাস শুরু করার কথা ভাবছে, তার পরে আবেদনের প্রক্রিয়া চালু করা। দ্বিতীয়ত, নথিপত্র যাচাই না-করেই বৃত্তির আবেদন গ্রহণ শুরু করা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West BengalEducation Student Scholarship Portal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE