পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ননীবালা। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে চড়াও হয়ে শবর মহিলাকে মারধরের অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির এক সিভিক ভলান্টিয়ারের দিকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরাবাজারের চিপিংডি গ্রামের ঘটনা। শুক্রবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত হচ্ছে। জখম মহিলা আপাতত পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বরাবাজারের ভাগাবাঁধ পঞ্চায়েতে চিপিংডি গ্রাম। সেখানেই থাকেন বছর পঁয়তাল্লিশের ননীবালা শবর। তাঁর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাগোয়া লাউবেড়া গ্রামের বাসিন্দা বরাবাজার থানার সিভিক ভলান্টিয়ার সনাতন মাহাতো এক বন্ধুকে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হন। গালিগালাজ, চড়-থাপ্পড় শুরু হয়। ননীবালার দাবি, সেই সময়ে তাঁর স্বামী জিতুলাল ঘরেই ছিলেন। তিনি বাধা দিতে এলে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ননীবালা বলেন, ‘‘আমি এঁটে উঠতে পারছিলাম না। হঠাৎ ছেলেটা ধারাল কিছু একটা দিয়ে মাথায় মারে। আমি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাই।’’
জিতুলালের দাবি, দিন কয়েক আগে তিনি ও ননীবালা জমির ধান কেটে দেওয়ার কড়ারে অগ্রিম দুশো টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় জমিতে যেতে পারেননি। তার পরেই সনাতন বাড়িতে এসে ঝামেলা শুরু করেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। জিতুলাল বলেন, ‘‘মারধরে স্ত্রী জ্ঞান হারালে আমি আর দুই ছেলে মিলে চিৎকার করে উঠি। তখন ওরা পালায়।’’ তাঁর দাবি, ননীবালার মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়ছিল। তাঁকে প্রথমে বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সনাতন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওঁদের থেকে কিছু টাকা পেতাম। সেই ব্যাপারেই কথা বলতে বাড়িতে গিয়েছিলাম।’’ সনাতন দাবি করেছেন, ননীবালা ছুটে আসার সময়ে হোঁচট খেয়ে পড়েছিলেন। তাতেই চোট লেগেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ কেন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধরল না? বরাবাজার থানার আধিকারিক জানান, তদন্ত চলছে। যেমন তথ্য-প্রমাণ উঠে আসছে, সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবরকল্যাণ সমিতি। তাঁদের এক কর্মী এ দিন চিপিংডি গ্রামেও গিয়েছিলেন। সমিতির মুখপাত্র প্রশান্ত রক্ষিত বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার হয়ে ওই লোকটি নিজেই আইন ভেঙেছে। তদন্ত করে ওকে যাতে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়, আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy