Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

২০০ ‘সেফ-হোমে’ ১০ হাজার শ্রমিককে পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত

স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে শুক্রবার পর্যন্ত অ্যাক্টিভ করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ছ’হাজার। এদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক।

স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, পরিযায়ী শ্রমিকদের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় তৃতীয় দফার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছবি: পিটিআই।

স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, পরিযায়ী শ্রমিকদের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় তৃতীয় দফার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০৩:৩৮
Share: Save:

রাজ্যে করোনার প্রথম পর্যায়ের সংক্রমণ এসেছিল বিমানে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের মারফত। দ্বিতীয় দফায় ভিন্‌ রাজ্যের শ্রমিকবাহী ট্রেনগুলি আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ গত ১৫ দিনে দ্বিগুণ হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, পরিযায়ী শ্রমিকদের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় তৃতীয় দফার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তা ঠেকাতে রাজ্যে ২০০ সেফ-হোম তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে অবিলম্বে গ্রামের আক্রান্ত ব্লকগুলি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, দু’এক দিনের মধ্যে ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ২০০ ব্লকে সেফ-হোম তৈরি করা হবে।

স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে শুক্রবার পর্যন্ত অ্যাক্টিভ করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ছ’হাজার। এদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, গ্রামে ফেরা পরিযায়ীদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। একাংশের মধ্যে সামান্য উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আইসিএমআরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এঁদের বাড়িতে থাকার কথা। কিন্তু শ্রমিকদের বাড়িতে জায়গা না থাকায় নিভৃতবাস প্রায় অসম্ভব। সেই কারণে ২০০ সেফ হোমে ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক বা সামান্য উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের সরিয়ে রাখা হবে। সাত-দশ দিনের মধ্যে তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে উপসর্গ দেখা দেওয়া অন্যদের আবার সেফ-হোমে এনে রাখা হবে। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের কথায়, ‘‘গ্রামে পরিযায়ীদের থেকে সংক্রমণ ঠেকানো গেলে রাজ্যের করোনা যুদ্ধ আমরা সহজেই জিততে পারব।’’

জেলার নিভৃতবাস তো আছেই, তা হলে সেফ-হোমে বাড়তি সুবিধা কী? স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, এই সুবিধা ব্লকস্তরে করা হচ্ছে। প্রতিটি সেফ হোমে এক জন করে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। দিনে দু’বার করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। সরকার ২০০০ পাল্‌স-অক্সিমিটার কিনেছে। তা দিয়ে দিনে দু’বার পরিযায়ীদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা হবে। যদি দেখা যায় অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, তাঁদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হবে। নিভৃতবাসে এই স্বাস্থ্য-সুবিধা ছিল না।

আরও পড়ুন: ৭৩ দিনে প্রথম ৫ হাজার, পরের ৫ হাজার সংক্রমণ মাত্র ১৩ দিনে

আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট নজরদারিতে রাজ্যের হাতিয়ার প্রযুক্তি

নবান্নের একটি সূত্রের মতে, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে গ্রামে গ্রামে অশান্তি শুরু হয়েছে। উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও হচ্ছে। ফলে তাঁরা ‘সেফ-হোমে’ সাত-দশ দিন থাকলে গ্রামের মানুষের ভীতিও দূর হবে বলে আশা প্রশাসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE