Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Flood

বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছল রাজ্যের একাধিক নাট্য সংগঠন

উদ্যোগের নাম ‘বন্যাত্রাণে নাট্যবন্ধুরা’। শামিল হলেন ‘হাওড়া নির্ণয়’, ‘হাওড়া জোনাকি’, ‘পূর্ব কলকাতা বিদূষক’, ‘যাদবপুর আনকার্টেইন্ড’, ‘কাঁকিনাড়া শিল্পাঙ্গন’, ‘আমাদপুর সম্প্রীতি’, ‘আরামবাগ নাট্য অ্যাকাডেমি’র মতো দলের কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেই অংশ নিয়েছিলেন এমন অনেকে, যাঁরা একাধিক নাট্যদলে কাজ করেন।

ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে নাট্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে নাট্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:১৬
Share: Save:

এবারও বন্যায় ভেসেছে গ্রামবাংলার একটা বড় অংশ। জলের মধ্যেই উৎসবহীন দিন কাটালেন দুই দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, হুগলি এবংহাওড়ার বহু এলাকার মানুষ। বন্যার্ত ওই মানুষদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হয় বিভিন্ন জেলার একাধিক নাট্যদল। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় ওই দলগুলির নাট্যকর্মীরা নিয়ে পৌঁছলেন ত্রাণ।

উদ্যোগের নাম ‘বন্যাত্রাণে নাট্যবন্ধুরা’। শামিল হলেন ‘হাওড়া নির্ণয়’, ‘হাওড়া জোনাকি’, ‘পূর্ব কলকাতা বিদূষক’, ‘যাদবপুর আনকার্টেইন্ড’, ‘কাঁকিনাড়া শিল্পাঙ্গন’, ‘আমাদপুর সম্প্রীতি’, ‘আরামবাগ নাট্য অ্যাকাডেমি’র মতো দলের কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেই অংশ নিয়েছিলেন এমন অনেকে, যাঁরা একাধিক নাট্যদলে কাজ করেন। ছিলেনমানবাধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েক জন। গান বেঁধে, সুর করে, সেই গান গেয়ে পুজোর সময় কলকাতা ও শহরতলির প্যান্ডেলে-পথে-বাজারে কৌটো ঝাঁকিয়ে, কাপড় বিছিয়ে চাঁদা তুলেছিলেন তাঁরা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। অনলাইনেও চাঁদা দেন বহু মানুষ। চাঁদার টাকায় ত্রাণসামগ্রী কেনা হয় বলে ‘বন্যাত্রাণে নাট্যবন্ধুরা’-র তরফে জানানো হয়েছে।

প্রথম দফায়, লক্ষ্মী পুজোর দিন ওই দলটি ত্রাণ নিয়ে পৌঁছয়, মালদহ জেলার দু’টি গ্রামের ৩০০-রও বেশি পরিবারের কাছে। ওই দুই গ্রাম হল রতুয়া-১ ব্লকেরকাহালা অঞ্চলের সাঁইপাড়া ও পূর্ব বিন্দপাড়া। রতুয়া থানার কিছুটা দূরেই কাহালা।সেখানে পৌঁছনোর রাস্তা ছিল জলের তলায়। ওই জায়গা পেরোতে হয়েছে নৌকায়, ত্রাণের মালপত্র-সহ। সারা দিন ধরে সেখানে চাল-ডাল-আলু-নুন বিলি করেন নাট্যকর্মীরা। সঙ্গে ছিল জ্বর-পেটখারাপ-চুলকানির ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো জিনিসও।

বানভাসি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিলি। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: ‘গ্যাস চেম্বার’ দিল্লি! বাতাসের ভয়ানক অবনতিতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারি

এর পরে ত্রাণ বিলিকরা হয়গোলঢাব নামে এক চরে। মালদহ থেকে সড়ক পথে ঘণ্টাখানেক দূরে কালিয়াচক-২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর এলাকার পাগলাঘাট। সেখান থেকে নৌকায় ঘণ্টা দেড়েক গঙ্গা বেয়ে পৌঁছতে হয় গোলঢাব চর। দিগন্তবিস্তৃত বিরাট চরে একাধিক গ্রাম। জায়গাটা প্রশাসনিকভাবে ঝাড়খণ্ড অন্তর্গত।কিন্তু জমিজমাসংক্রান্ত কাগজপত্র সব এ রাজ্যের ভূমি রাজস্ব বিভাগের জিম্মায়। গঙ্গার খাত বদলের সঙ্গে সঙ্গেই এই চরের মানুষদের ঠিকানা বদলায়। গঙ্গার ঢেউয়ে নিরন্তর ভেঙে পড়ছে চরের পাড়।আরপিছিয়ে যাচ্ছে লোকবসতি। এভাবেই এক সময় বাংলা থেকে বিহার, তার পর ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দাহয়ে গিয়েছেন চরের মানুষ।

ত্রাণ বিলির পথে। নিজস্ব চিত্র

কালীপুজোর দিনওত্রাণ বিলি করা হয় মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের হোসেনপুর গ্রামে। ওই টিমে তিন জন চিকিৎসকও ছিলেন। ফরাক্কা বাঁধ থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার উজানে হোসেনপুর এবারও জলের নীচে ছিল প্রায় এক মাস। পুজোর পর থেকে জল নামতে শুরু করে। কিন্তু নদীর গ্রাসে তলিয়ে যায় তিনশোর বেশি পরিবারের ঘরবাড়ি। তাঁদের একাংশ রয়েছেন গ্রাম থেকে দূরে একটি ত্রাণশিবির ও সংলগ্ন জমিতে।বাকিরা গ্রামেরই এখানেওখানে অপরের জমিতে ত্রিপলের তাঁবুতে। এর পর কোথায় থাকবেন, তাঁরা জানেন না।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে ছাড়াই সরকার গড়তে পারে শিবসেনা, হুঁশিয়ারি সঞ্জয় রাউতের

ত্রাণসামগ্রী বিলি করা হয় গ্রামের প্রায় দু’শো পরিবারকে। এ কাজে সহায়তা করেন ‘গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি’র তরফে কেদারনাথ মণ্ডল। মেডিক্যাল ক্যাম্পে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নেন গ্রামবাসীরা। প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ কম পড়ে যায়। ওষুধ ও মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যাপারে ‘শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ’-এর পাশাপাশি চিকিৎসক পূণ্যব্রত গুণ, অর্জুন দাশগুপ্ত ও তপনজ্যোতি দাশসহায়তা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Flood Relief Drama Group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE