Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
International border trade at Patrapole

কয়েক দিনের মধ্যেই চালু হতে চলেছে পেট্রাপোলে সীমান্ত বাণিজ্য, ইঙ্গিত নবান্নের

নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে সীমান্ত বাণিজ্যে ছাড় দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বাংলাদেশে রফতানির ক্ষেত্রে পেট্রাপোল সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর।

পেট্রাপোল সীমান্ত। ফাইল চিত্র।

পেট্রাপোল সীমান্ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ২১:১৭
Share: Save:

প্রায় ৯ সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর বনগাঁর পেট্রাপোলে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য ফের শুরু হতে চলেছে। কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরে বন্ধই ছিল পেট্রোপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি।

নবান্ন সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে সীমান্ত বাণিজ্যে ছাড় দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বাংলাদেশে রফতানির ক্ষেত্রে পেট্রাপোল সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর ২৪ হাজার কোটি টাকার আমদানি রফতানি হয় এই স্থলবন্দরের মাধ্যমে। সরাসরি প্রায় ২০ হাজার মানুষ এবং পরোক্ষ ভাবে সব মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল এই স্থলবন্দরের উপর।

পেট্রাপোল স্থলবন্দর সূত্রে খবর, গত ২৩ মার্চ থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় সীমান্ত বাণিজ্য। পেট্রাপোলে আটকে পড়েছে মাল বোঝাই প্রায় আড়াই হাজার ট্রাক। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার নির্দেশ দেওয়ার পর ২৯ এপ্রিল আমরা কাজ শুরুর চেষ্টা করি। কিন্তু সেই সময় তা বন্ধ হয়ে যায়।’’ বনগাঁর স্থানীয় বাসিন্দারা কোভিড ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রশাসনের কাছে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করার আর্জি জানান। ফলে ফের বন্ধ হয়ে যায় সীমান্ত বাণিজ্য। এর মধ্যেই পেট্রাপোল চত্বর কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ফলে সীমান্ত বাণিজ্য চালু হওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না।

আরও পড়ুন: নতুন ট্রেন্ড ‘বয়কট চায়না অ্যাপ’, বিকল্প নিয়ে কী বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা?

ইতিমধ্যে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্তেরা মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে বাণিজ্য ফের চালু করার আবেদন জানিয়ে দরবার করেন। গত ৩০ মে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠও স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, ক্লিয়ারিং এজেন্ট এবং শ্রমিকরা, স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং মহকুমা প্রশাসনও ঐকমত্য হয়েছেন দ্রুত সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে। গোপালবাবু স্বরাষ্ট্র সচিবকে জানিয়েছেন, সমস্ত ধরনের স্বাস্থ্য বিধি মেনেই কাজ চালু করা হবে।

আরও পড়ুন: অফিস আছে, বাস নেই, চরম ভোগান্তি-অনিশ্চয়তা রাস্তায় নামা মানুষের

সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসন ‘জিরো’ পয়েন্টে কাজ শুরু করার অনুমতি দিতে চলেছে। জিরো পয়েন্ট অর্থাৎ দুই দেশের সীমান্তে ঢোকা-বেরনোর গেটের মাঝখানের জায়গা। সেখানে এ দেশের লরি যাবে। অন্য দিকে থেকে বাংলাদেশের লরি আসবে। ভারতের লরি থেকে মালপত্র নামাবে বাংলাদেশের শ্রমিকরা। তবে এ পদ্ধতিতে খুশি নন অধিকাংশ ব্যাবসায়ীই। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সীমান্তে ওই পদ্ধতিতে কাজ করলে দিনে সাত-আটটার বেশি লরি পাস করবে না।” তাই ব্যবসায়ীরা চান আগের পদ্ধতিতেই ভারতের ট্রাক বাংলাদেশের বন্দরে ঢুকে যাক। এখান থেকেই চালককে খাবার জল এবং কোভিড সুরক্ষার প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম দেওয়া হবে। চালক গাড়ি থেকে নামবেন না। বাংলাদেশের শ্রমিকরা মাল খালাস করে দেবেন। চালক ফিরলে ফের তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হবে এবং গাড়ি স্যানিটাইজ করা হবে। তবে সেই প্রস্তাব সরকার আদৌ মানবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Petrapol India Bangladesh Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE