Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Migrant Worker

শ্রমিক ফেরাতে ‘অসহযোগিতা’! মমতাকে অমিতের চিঠি ঘিরে তরজা

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলে পাল্টা জানিয়েছে তৃণমূল।

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের।

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২০ ১২:০৪
Share: Save:

রাজ্যের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সমর্থন পাচ্ছে না কেন্দ্র। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো নিয়ে এই মর্মে চিঠি লিখে রাজ্যকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার তিনি রাজের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে রাজ্যের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টিকে ‘অবিচার’ আখ্যা দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহের এই অভিযোগের জবাব দিয়েছে তৃণমূল। জোড়াফুল শিবিরের মতে, এই অভিযোগ মিথ্যা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই চিঠি কী ভাবে সংবাদমাধ্যমের হাতে চলে গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে পৌঁছে দিতে রেল ‘শ্রমিক স্পেশাল’ চালানোর ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন অংশে আটকে পড়া বাংলার শ্রমিকদের উপর তাঁদের নিজেদের রাজ্যই ‘অবিচার’ করছে। চিঠিতে অমিত দাবি করেছেন, লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে এখনও পর্যন্ত দু’লক্ষ শ্রমিককে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারের থেকে যথেষ্ট সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা পশ্চিমবঙ্গের থেকে প্রত্যাশা মতো সাহায্য পাচ্ছি না।’’ কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অমিত শাহ লিখেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার ট্রেন ঢুকতে দিচ্ছে না।’’ তাঁর মতে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। তাঁদের আরও দুর্ভোগ হচ্ছে।’’

রাজস্থানের অজমের থেকে একটি ট্রেন ডানকুনিতে এবং কেরল থেকে এক হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে অন্য একটি ট্রেন বহরমপুরে সম্প্রতি পৌঁছেছে— সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অমিত শাহের এই অভিযোগের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন অনলাইন সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন দাবি করেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যেই পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত ও বেঙ্গালুরু থেকে পশ্চিমবঙ্গে ট্রেন আসছে।’’ অমিত শাহকে নিশানা করে ঝাঁঝালো সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। আর কত নীচে নামবেন উনি?’’ এর পরই পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘লকডাউনের আগে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য চাল-ডালেরও ব্যবস্থা করা হয়নি।’’ শুক্রবার অওরঙ্গাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় ১৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর দায় কার, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন: বদলে যাচ্ছে করোনার উপসর্গ, দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্যভবন

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যা বলছেন বলে টুইট করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘এমন একটা সঙ্কটের মুহূর্তে নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার পর, নীরবতা ভঙ্গ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একগুচ্ছ মিথ্যা বলে মানুষকে বিপথে চালিত করছেন তিনি। তিনি সেই সমস্ত মানুষদের নিয়ে কথা বলছেন, যাঁদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল তাঁদের সরকারই। অমিত শাহ, আপনি আপনার অভিযোগ প্রমাণ করুন, নয়তো ক্ষমা চান।’’

অমিত শাহের চিঠি নিয়ে দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অসত্য বলছেন। ওই চিঠি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা খারাপ রাজনীতির উদাহরণ। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর থেকে আশা করা যায় না।’’

এটাই প্রথম নয়। দেশে করোনার প্রকোপ ও লকডাউনের এই সময়ে নানা বিষয় নিয়ে তরজায় জড়িয়ে পড়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য। করোনা আবহে রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে এর আগে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলও পাঠানো হয়। তা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সঙ্ঘাত শুরু হয়েছিল। অমিতের চিঠিতে সেই সঙ্ঘাতের সুর আরও চড়া হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE