Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

নেতাজির মতোই কোণঠাসা করার চেষ্টা বাঙালি মমতাকে: ব্রাত্য

ব্রাত্য তথা তৃণমূলের আক্রমণের অভিমুখ বিধানসভা ভোটের জন্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিযুক্ত পাঁচ নেতার প্রতি। জন্ম এবং কর্মসূত্রে যাঁরা অবাঙালি।

তৃণমূলের ‘বাঙালি-অবাঙালি’ তত্ত্ব...

তৃণমূলের ‘বাঙালি-অবাঙালি’ তত্ত্ব...

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ১৮:৩৬
Share: Save:

‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে এ বার ‘বাঙালি-অবাঙালি’ তত্ত্বে নিয়ে গেল তৃণমূল। বাঙালিকে শাসন করার জন্য উত্তর ও পশ্চিম ভারত থেকে অবাঙালিদের বাংলায় পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বস্তুত, ব্রাত্যের বক্তব্য— নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে যে ভাবে কোণঠাসা করা হয়েছিল, সে ভাবেই এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে সাবধানী ব্রাত্য এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নেতাজির সঙ্গে তিনি মমতার ‘তুলনা’ করছেন না। ‘উদাহরণ’ দিচ্ছেন মাত্র।

বলা বাহুল্য, ব্রাত্য তথা তৃণমূলের আক্রমণের অভিমুখ বিধানসভা ভোটের জন্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিযুক্ত পাঁচ নেতার প্রতি। জন্ম এবং কর্মসূত্রে যাঁরা অবাঙালি।

শুক্রবার ব্রাত্য বলেন, ‘‘বহিরাগত কর্তৃক বাংলাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বাংলাকে না বোঝা, বাংলার সংস্কৃতি না বোঝা, বাংলার নাড়ি না বোঝা কিছু লোক বাংলায় ঘোরাঘুরি করছেন। এই বহিরাগত তাণ্ডব বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙারই একটা পরের ধাপ।’’ পাশাপাশিই ব্রাত্য বলেছেন, ‘‘আরএসএসের প্রধান পদে তো কোনওদিন কোনও বাঙালিকে বসানো হয়নি! হয় তেলুগু ব্রাহ্মণ বা মরাঠি ব্রাহ্মণকে বসানো হয়েছে ওই পদে।’’ রাজ্যের এই মন্ত্রীর আরও অভিযোগ, রাম মন্দিরের আশেপাশে ১৮টি মন্দির রয়েছে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির তো সেখানে নেই! ব্রাত্যর মতে, অবাঙালিরা বা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মানুষকে বাংলা চিরকাল স্বাগতই জানায়। কিন্তু এখন যা হচ্ছে, তা বাঙালিকে ‘নিয়ন্ত্রণ করা এবং কোণঠাসা করার চেষ্টা’।

আরও পড়ুন: মেঠো কবাডি থেকে সবুজ গল্ফ কোর্সে, নব্য অবতারে ময়দানে নয়া দিলীপ

সে প্রসঙ্গেই নেতাজির উদাহরণ দিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘যে ভাবে অবাঙালিদের দিয়ে সুভাষ বসুকে কোণঠাসা করা হয়েছিল, সেই একই ভাবে উত্তর ও পশ্চিম ভারত থেকে লোক পাঠানো হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ন্ত্রণ করতে। বাংলার মানুষ কি এটা মেনে নেবেন?’’ নেতাজিকে যে ভাবে কংগ্রেস ছাড়তে হয়েছিল, নেতাজির অন্তর্ধানের পাঁচ দশক পর মমতাকেও সে ভাবে কংগ্রেস ছাড়তে হয়েছিল বলে ব্রাত্য মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সুভাষ বসুর মতোই নিজস্ব আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেছিলেন। যার নাম তৃণমূল কংগ্রেস।’’

খানিকটা আক্রমণাত্মক ঢংয়েই ব্রাত্য বলেন, ‘‘আমাদের মাথার উপর অন্য রাজ্যের নেতারা এসে বসবেন, শাসন করবেন আর বলবেন রবীন্দ্রনাথের জন্ম বোলপুরে! আদিবাসী নেতার গলায় মালা দিয়ে বলবেন বিরসা মুণ্ডার গলায় মালা দিয়েছেন! এগুলো মেনে নেওয়া হবে না।’’

আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্যাবিনেটে বাঙালি অরুণ মজুমদারের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তির কথা মনে করিয়ে দিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘বাঙালির গুরুত্ব আমেরিকাও বোঝে। কিন্তু দিল্লি বোঝে না। মোদী বোঝেন না।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি সাত বছর ধরে কেন্দ্রে সরকার চালাচ্ছে। অথচ সেখানে একজনও বাঙালি পূর্ণমন্ত্রী নেই কেন? মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য জিতলেও তাঁকে পূর্ণমন্ত্রিত্ব কেন, কোনও মন্ত্রিত্বই দেওয়া হয়নি!’’

আরও পড়ুন: শীতের আমেজ আগামী সপ্তাহে, সোমবার থেকে নামবে তাপমাত্রা, জানাল হাওয়া অফিস​

ব্রাত্যর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, বাংলায় অতঃপর বাঙালি-অবাঙালি তত্ত্ব নিয়ে নামবে তৃণমূল। ‘বহিরাগত’রা যে অবাঙালি, প্রাথমিক ভাবে সেটাই রাজ্যের মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে। ব্রাত্য অবশ্য পাশাপাশিই বলেছেন, ‘‘আমরা বিশ্ববাংলার কথা বলি। বাংলায় কোনও বাঙালি-অবাঙালি-হিন্দু-মুসলিম-শিখ ভেদাভেদ করা হয় না। হবেও না। কিন্তু এখন বাংলায় বহিরাগতরা এসে তাণ্ডব চালাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Bratya Basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE