স্পিকার, শুভেন্দু, রাজ্যপাল। ফাইল ছবি।
বিধায়কপদে তাঁর ইস্তফা নিয়ে যে ‘পদ্ধতিগত জটিলতা’ তৈরি হয়েছিল, তার নিরসনে সোমবার বিধানসভায় এসে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার পর তিনি যাবেন রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে। ঘটনাচক্রে, সোমবারই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ‘গ্রহণ’ করেছেন শুভেন্দু। যে ‘জেড’ ক্যাটিগরির নিরাপত্তা তাঁর জন্য আগেই বরাদ্দ করা হয়েছিল। বুলেটপ্রফ গাড়ি-সহ তাঁর সঙ্গে তিনজন সশস্ত্র রক্ষী তো বটেই, তাঁর বাড়ির সামনেও সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। গত শনিবার বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর সেই নিরাপত্তা নিয়ে শুভেন্দুর এই প্রথম শহরে আগমন।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় গত শুক্রবার জানিয়েছিলেন, শুভেন্দুর হাতে-লেখা ইস্তফাপত্রে তারিখ নেই। তা ছাড়া, তিনি সশরীরে এসেও ওই ইস্তফা জমা দেননি। যা রীতিবিরুদ্ধ। ফলে ওই ইস্তফা তিনি গ্রহণ করছেন না। তাঁর বিধানসভায় খাতায়কলমে শুভেন্দু এখনও তৃণমূলেরই বিধায়ক। তিনি শুভেন্দুকে সোমবার বিধানসভায় এসে আবার ইস্তফা জমা দিতে বলেছিলেন। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে সেদিনই জানানো হয়েছিল, তিনি স্পিকারের আহ্বান মেনে সোমবার বিধানসভায় আসবেন। একমাত্র আনন্দবাজার ডিজিটালেই সে কথা লেখা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে, তার কোনো অন্যথা হচ্ছে না। বস্তুত, শুভেন্দু ওই বিষয়ে কথা রাখতে এতটাই তৎপর যে, তিনি প্রস্তাবিত দিল্লি সফরও পিছিয়ে দিয়েছেন।
সোমবার বেলা ২টোর সময় শুভেন্দুর বিধানসভায় পৌঁছনোর কথা। ওই সময়েই স্পিকারের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা। হাতে-লেখা ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার সময় শুভেন্দু ইমেলেও স্পিকারকে একটি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আইনসভার রীতি হল পদত্যাগের সময় সংশ্লিষ্ট বিধায়ক বা সাংসদকে সশরীরে এসে নিজের হাতে সই করে স্পিকার বা চেয়ারম্যানের (সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ক্ষেত্রে) কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিতে হবে। নইলে তা ‘বৈধ’ বলে গণ্য হবে না। শুভেন্দুর ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছিল। কারণ, স্পিকার সেদিন বিধানসভায় না থাকায় তিনি স্পিকারের সচিবালয়ে গিয়ে তাঁর ইস্তফা জমা দিয়ে আসেন। তবে ইস্তফাপত্রের একটি প্রতিলিপিতে ‘রিসিভ’ করিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে নীতিগত ভাবে তাঁর ইস্তফা নিয়ে কোনও জটিলতা ছিল না। যেটুকু ছিল, তা একেবারেই ‘পদ্ধতিগত’। সেটির নিরসনেই আসতে হবে শুভেন্দু। তিনি আসছেন বলেই খবর।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে নিয়ে চর্চা, অমিতের ‘ধরিত্রীপুত্র মুখ্যমন্ত্রী’ কে, জল্পনা
স্পিকারের সঙ্গে দেখা করার পর শুভেন্দু যে রাজভবনে যাচ্ছেন, তা সকালেই টুইট করে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়। সেই সাক্ষাতেরও ইতিবৃত্ত রয়েছে। বিধায়কপদ থেকে ইস্তফার দিনই রাজ্যপালকে একটি চিঠি লিখেছিলেন শুভেন্দু। তাতে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বদলের পর রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত’ তাঁর এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করেছে। রাজ্যের ‘সাংবিধানিক প্রধান’ হিসাবে রাজ্যপাল যেন বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। শুভেন্দুর চিঠি পেয়ে রাজ্যপাল দ্রুত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি লেখেন। ফলে সোমবার রাজ্যপাল-শুভেন্দু সাক্ষাৎ নিয়েও কৌতূহল এবং আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনে সাত দিনের ছুটি কাটাতে চান অমিত শাহ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy