Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Municipal Election 2020

ভোট-তৎপরতায় ‘ঘাটতি’ কি কমিশনেই?

২৭ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা। তারই ভিত্তিতে হবে পুরভোট।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫২
Share: Save:

রাজ্যে পুরভোটের দিনক্ষণ নিয়ে তো বিস্তর জল্পনাকল্পনা চলছেই। সেই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ভোট করানোর মালিক রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ‘সক্রিয়তায় ঘাটতি’র দরুন আতান্তরে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অনেক জেলা প্রশাসন। তবে রাজ্য কমিশনের দাবি, প্রস্তুতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। সবই ঠিকঠাক হবে।

২৭ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা। তারই ভিত্তিতে হবে পুরভোট। তা হলে ভোটার তালিকার সঙ্গে পুরভোটের প্রস্তুতির কী সম্পর্ক? ওয়াকিবহাল শিবিরের বক্তব্য, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তৈরি তালিকায় অনেক সময়েই প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজ করতে হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কারণ, লোকসভা বা বিধানসভা কেন্দ্রের এলাকা বড়। যে-কোনও পুরসভার যে-কোনও ওয়ার্ড স্বভাবতই তার থেকে অনেক ছোট। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তালিকার কোনও একটি অংশ হয়তো দু’টি রাস্তার মাঝখান থেকে গিয়েছে। ফলে তা দু’টি ওয়ার্ডে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। সেই জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী তা বদল করে একটি অংশের মধ্যে ঢোকাতে হয়। এবং এই ধরনের কাজ যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

কেন অনেকটা সময় দরকার, তার ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, বুথগুলির হালহকিকত থেকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে খসড়া তৈরি করতে হয়। তার পরে সেটা পাঠাতে হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে। এই গোটা প্রক্রিয়াটিই চালায় জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। গত বুধবার পুরভোটের প্রস্তুতি পর্বে হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বুথ পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। এই নির্দেশের পরে অন্যান্য জেলা প্রশাসনের অনেক পদাধিকারীর প্রশ্ন, ‘‘আমাদের জেলাগুলি এ-সব কবে করবে? তবে কি আমাদের ভোট এখন হবে না!’’

আরও পড়ুন: ছক কষেই খুন মা-মেয়েকে, চুল ও কানের দুল থেকে মিলল সূত্র

পুরভোটে ভোটার ব্যালট পেপারে ছাপ দেবেন, নাকি ইভিএম বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে থাকা বোতাম টিপবেন, সেই বিষয়েও কমিশনের তরফে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানানো হয়নি। ‘‘এই দু’টি প্রক্রিয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রস্তুতি চালাতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের কোন প্রস্তুতিটা চালাতে হবে, সেটাও তো জানি না,’’ বলছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের অনেক কর্তা।

এমন অবস্থা কেন?

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে না-হলেও কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে অনেকটাই। কিন্তু বাকি পুরসভাগুলির ভোট নিয়ে সে-ভাবে চর্চা নেই বলে প্রশাসনের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে। সেই কারণে হয়তো রাজ্য কমিশন এখনও পর্যন্ত খুব বেশি ‘সক্রিয়তা’ দেখায়নি। এক কর্তার কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যা, তাতে জেলার সঙ্গে শুধু সমন্বয়ের জন্যই কয়েক জন অফিসারকে বসতে হবে কমিশনে। তা না-হলে ভোটের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করাই কঠিন হয়ে পড়বে।’’

এ ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টানছেন প্রশাসনের কর্তাদের অনেকের। তাঁদের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচন আমচকা ঘোষণা হলেও কমিশন অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল। পুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিন্তু কমিশনের তৎপরতা সে-ভাবে নজরে পড়ছে না বলে প্রশাসনের কর্তাদের অনেকের অভিমত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE