বিলাসবহুল এলাকার বহুতলের ১৭তলায় থাকেন ৬০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা। ফ্ল্যাটের ভিতরেও বিলেত থেকে আনা আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো। শখ করে সাজানো ফ্ল্যাটে ‘অদ্ভুত শখপূরণ’ করছেন তিনি। দামি ফ্ল্যাটের ভিতর ইঁদুর, আরশোলা, মশা এবং মাছির বাস। বিদঘুটে বড় বড় পোকাও ঘুরে বেড়ায় ঘর জুড়ে।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে বৃদ্ধা যে ফ্ল্যাটটি কিনেছেন, তার অন্দরমহল জুড়ে রয়েছে জঞ্জালের স্তূপ। রাস্তা থেকে জঞ্জাল কুড়িয়ে তা জমিয়ে রাখার শখ রয়েছে তাঁর। বৃদ্ধার এই শখপূরণের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন প্রতিবেশীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তবুও পুলিশের নির্দেশ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন বৃদ্ধা।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ৬০ বছর বয়সি বৃদ্ধার নাম চেং। চিনের সাংহাইয়ের হুয়াংপু জেলায় থাকেন তিনি। স্বামী এবং কন্যাকে নিয়ে সংসার ছিল তাঁর। কিন্তু বর্তমানে বিবাহবিচ্ছিন্না চেং। মেয়েও আর মায়ের সঙ্গে থাকেন না। ৩ কোটি ৬০ লক্ষ ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪২ কোটি ৮৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৬০ টাকা) খরচ করে বিলাসবহুল এলাকায় একটি বহুতলের ১৭তলায় ফ্ল্যাট কিনেছেন চেং। শখ করে নানা ধরনের দামি আসবাবপত্র দিয়ে ফ্ল্যাটটি সাজিয়েও ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
এমনকি, তাঁর বসার ঘরে একটি বিশাল সোফা রয়েছে। ইটালি থেকে দু’লক্ষ ইউয়ান দিয়ে (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭১২ টাকা) সেই সোফাটি কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু ঘরের ভিতর সে সব দামি আসবাব বড় অযত্নে রেখেছেন চেং।
প্রতিবেশীদের দাবি, প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, পচে যাওয়া খাবার রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে ফ্ল্যাটের ভিতর জমিয়ে রাখেন তিনি। ঘরে জমানো জঞ্জালের স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। নোংরা ঘরে ঘুরে বেড়ায় ইঁদুর, আরশোলা, মশা এবং মাছি। এমনকি, করিডরেও সেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:
১৭তলায় টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়ে প্রতিবেশীদের। এমনকি, কেউ কেউ এই দুর্গন্ধের চোটে নিজেদের ফ্ল্যাট বিক্রি করে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। শত অনুরোধ করেও ঘর থেকে সেই জঞ্জাল সরাতে রাজি হননি চেং। শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন প্রতিবেশীরা। পুলিশের নির্দেশও গ্রাহ্য করেননি চেং। পুলিশের দাবি, ২০২৩ সালে চেংয়ের কন্যার সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছিলেন।
চেংকে সেই জঞ্জাল পরিষ্কারের জন্য রাজি করানোর অনুরোধ করা হয়েছিল তরুণীকে। প্রথমে রাজি হলেও পরে নাকি চেংয়ের কন্যা বলেছিলেন, ‘‘মায়ের কোনও কাজে আমি নাক গলাতে চাই না। যা করার ইচ্ছা করুক।’’ উপায় না দেখে চেংয়ের বিবাহবিচ্ছিন্ন স্বামীর সঙ্গে সম্প্রতি যোগাযোগ করেছে পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, শীঘ্রই চিকিৎসা করাবেন চেংয়ের।