Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Husband

Crime: ‘চাকরি করায় আপত্তি ছিল শ্বশুরবাড়ির, কিন্তু মেয়েটার হাত কেটে নেবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি’

রেণু নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করতেন। শনিবার তিনি সরকারি চাকরির চিঠি পেয়েছিলেন।

রেণু খাতুন।

রেণু খাতুন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ১৩:৩৯
Share: Save:

মেয়ে সরকারি চাকরি পাওয়ায় খুশি হয়েছিলেন বাবা। কিন্তু জামাই এবং তার পরিবারের লোকজনের ভাবভঙ্গিমায় আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল মনে মনে। কিন্তু সেই আশঙ্কা যে অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে, তা আন্দাজ করেননি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের চিনিসপুরের বাসিন্দা আজিজুল হক। শনিবার রাতে আজিজুলের মেয়ে রেণু খাতুনের ডান হাতের কব্জি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই স্বামী শের মহম্মদ শেখের বিরুদ্ধে। রেণুর পরিবারের দাবি, সামনের সপ্তাহেই তাঁর নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

আজিজুলের পাঁচ মেয়ে এবং তিন ছেলে। তার মধ্যে ছোট মেয়ে রেণু। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কোজলসা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখের একমাত্র ছেলে মহম্মদ ওরফে সরিফুলের সঙ্গে রেণুর বিয়ে হয়। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করতেন রেণু। কিন্তু চাকরি করা নিয়ে যে শ্বশুরবাড়িতে বিবাদের অন্ত ছিল না, তা জানিয়েছেন রেণুর বাবা আজিজুল। তবে এ নিয়ে যে মেয়ের প্রাণ সংশয় হতে পারে তা তাঁর কল্পনাতেও আসেনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে মেয়ে বার বার বলত, ‘ওরা আমাকে চাকরি করতে দেবে না।’ সে জন্য আমার জামাই এবং মেয়ের শ্বশুর, শাশুড়ি চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু মেয়ে সরকারি চাকরির সুযোগ ছাড়তে রাজি ছিল না। কিন্তু ওরা যে এমন করতে পারে, ভাবিনি।’’

দুর্গাপুরে বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করার সময় রেণুর সঙ্গেই থাকত মহম্মদ। সম্প্রতি সে কেতুগ্রামে ফিরে বাবার মুদিখানার দোকান সামলাত। আজিজুল আরও বলছেন, ‘‘জামাইয়ের ধারণা হয়েছিল, আমার মেয়ে চাকরি করলে সে আর বোধ হয় শ্বশুরবাড়িতে থাকবে না।’’

চাকরির চিঠি পেয়ে স্বামী হামলার মুখে বোন! বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না রেণুর দাদা রিপন শেখের। তিনি বলছেন, ‘‘দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তার পর ওদের বিয়ে হয়েছিল। সেখানে যে ওর প্রাণ সংশয় দেখা দেবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। সরকারি চাকরি পাকা হয়ে গিয়েছে বলে বোন দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ইস্তফাপত্র জমা দিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে শনিবার প্রথমে আমাদের বাড়িতে আসে। তার পর রাতে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। রাতেই খবর পাই, বোনের হাত কেটে নেওয়া হয়েছে।’’

রেণু নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এর পর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরিও করছিলেন। এর মাঝেই সরকারি চাকরিতে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। সম্প্রতি চাকরির প্যানেলে তাঁর নামও ওঠে। হাতে পেয়েছিলেন চাকরিতে যোগদানের চিঠিও। চাকরিতে যোগ দেওয়া সময়ের অপেক্ষা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটল ‘বিপত্তি’। ওই ঘটনায় মহম্মদ, তার বাবা, মা এবং তার দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Husband Wife Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE